মোল্লা জসিমউদ্দিন: টেটের প্রশ্নভূল নিয়ে ফের মামলা দাখিল হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে। এবার ২০২২ সালের টেট পরীক্ষায় প্রশ্ন ভুল রয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। সেই নিয়েইকলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মামলাকারী মৌসনা মিত্র-সহ ৫০০ জন পরীক্ষার্থী। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার সিঙ্গেল বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি চলে ।মামলাকারীদের দাবি, ‘২০২২ সালের টেট পরীক্ষায় ১৫টি প্রশ্ন নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে’। এদিনের মামলার পতিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকেও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। মামলাকারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে তাদের বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি, প্রশ্ন ভুল সংক্রান্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে একটি স্থায়ী সমাধানের পথ বের করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে, সেই কথাও জানিয়েছে সিঙ্গেল বেঞ্চ। বিচারপতি রাজাশেখথর মান্থার নির্দেশ, -‘পর্ষদ কী পদক্ষেপ করবে, সেই বিষয়ে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন আদালতকে জানাতে হবে’। আগামী ২০ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে হাইকোর্টে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষাতেও প্রশ্ন ভুল সংক্রান্ত মামলা উঠে এসেছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেখানেও প্রথমে হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল সব পরীক্ষার্থীকে ৬ নম্বর করে দিতে হবে। পরবর্তীতে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল। তবে ডিভিশন বেঞ্চও সেই সময় সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশই কার্যত বহাল রেখেছিল। আর এবার ২০২২ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষাতে প্রশ্নভূল অভিযোগে মামলা গড়াল কলকাতা হাইকোর্টে। হাইকোর্টে ৫০০ জন পরীক্ষার্থীর দাবি, -‘২০২২ সালের টেটে ১৫টি প্রশ্ন নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে’। । বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা পর্ষদের কাছ থেকে এই রিপোর্ট চেয়েছেন। বারবার টেটের প্রশ্ন ভুল নিয়ে যে অভিযোগ উঠছে তাতে মোটেই সন্তুষ্ট নয় কলকাতা হাইকোর্ট। এই বিষয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি মান্থার স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘প্রশ্ন ভুল নিয়ে পর্ষদকে স্থায়ী সমাধান বের করতেই হবে। এই ধরনের ইস্যুতে কারা নম্বর পাওয়ার যোগ্য?কারা নন? সেই নীতি নির্ধারণ করতে হবে পর্ষদকেই। আর তাঁরা যদি সেটা না পারে তাহলে আদালত ব্যবস্থা নেবে, এমনটাই বলেছেন বিচারপতি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২০ মার্চ। এর আগে ২০১৪ এবং ২০১৭ সালেও একই অভিযোগ উঠেছিল। ২০১৪ সালে ২০ লক্ষেরও বেশি প্রার্থী টেট দেন। ওই পরীক্ষায় ৬টি প্রশ্ন ভুল ছিল, এই অভিযোগ জানিয়ে মামলা করেন ১৭৫ জন। পরে আরও কয়েক জন তাতে যোগ দেন। ২০১৮ সালে এ নিয়ে তদন্তের জন্য কমিটি তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। তবে প্রশ্নভূল সমস্যা এখনও অব্যাহত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে।কেউ কেউ মনে করছেন যে, শিক্ষক নিয়োগে আইনী জট তৈরিতে প্রশ্নভূল এক গুরত্বপূর্ণ অধ্যায়।