পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: গুরুদ্বারে ধর্মগ্রন্থের পাতা ছিঁড়ে অবমাননা! পঞ্জাবে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে পিটিয়ে হত্যা উন্মত্ত জনতার। মৃতের নাম বকশিস সিংহ। বয়স ১৯। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্জাবের ফিরোজপুরের বন্ডালা গ্রামের বাবা বীর সিংহ নামে এক গুরুদ্বারে। অভিযোগ, এদিন গুরুদ্বারে ঢুকে শিখ ধর্মগ্রন্থের পাতা ছিঁড়ছিলেন ওই তরুণ। ঘটনাটি ঠাহর করতে পেরে বেজায় রেগে যায় উপস্থিত জনতা। ওই তরুণের উপর চড়াও হয় তারা। বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। তাতেই ওই যুবকের মৃত্যু হয় বলে খবর।
ঘটনার প্রেক্ষিতে, স্থানীয় এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, মৃত ওই যুবকের বিরুদ্ধে ‘ধর্মদ্রোহিতা’-র অভিযোগ এনেছে স্থানীয়রা। তবে নিহতের বাবার দাবি, বকশিস মানসিক ভারসাম্যহীন। দু’বছর ধরে চিকিৎসা চলছিল। এদিন নিহতের বাবা তাঁর ছেলেকে মারধরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশি পদক্ষেপ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত জারি রয়েছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
স্থানীয়দের একাংশ জানিয়েছেন, এর আগে বকশিস কখনও ওই গুরুদ্বারে আসেননি। পাতা ছেঁড়ার পর তিনি ছুটে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। মানসিকভারসাম্যহীন যুবক’কে ঘিরে যে যার মতো প্রহার চালাতে থাকে। ছেড়ে দেওয়ার জন্য আকুতি মিনতি করলেও মন গলেনি উন্মত্ত জনতার। ঘটনার একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, বকশিসের হাত বাঁধা। তাঁর শরীর দিয়ে রক্ত গড়াচ্ছে।
এদিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে স্থানীয় পুলিশ। বকশিস কে উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে।
ঘটনা প্রসঙ্গে অকাল তখতের জাঠেদার গিয়ানি রাঘবীর সিং জানান, “গুরুদ্বারে ঢুকে এই ধরনের ঘৃন্য কাজ আটকাতে পারেনি আইন। তাই মানুষ নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছে।” এলাকার কোনও গুরুদ্বারে বকশিসের শেষকৃত্য করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাঁর পরিবারকে সামাজিক বয়কট করা হয়েছে বলেও খবর।
শ্রী গুরু গ্রন্থ সাহিব সৎকার কমিটির চেয়ারম্যান লখবীর সিং-এর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫-এ ধারার অধীনে বকশিস সিংয়ের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে।