দেবশ্রী মজুমদার, বোলপুর: ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালে বিক্ষোভ। পাশাপাশি, কর্তব্যে অবহেলা ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ নার্সদের বিরুদ্ধে। রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রবিবার সকাল থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে হাসপাতাল। বিক্ষোভ দেখান রোগীর আত্মীয় স্বজনেরা। গোটা বিষয়ে মুখ খুলতে চায় নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি ছুটিতে আছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মৃতার নাম আগমনী হাজরার (২৫)।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমান জেলার রাজুর গ্রামের বাসিন্দা আগমনী হাজরা সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল নানুর থানার সাওতা গ্রামের সুজয় হাজরার। তাঁদের ৭ বছরের এক কন্যাসন্তান রয়েছে। সম্প্রতি দ্বিতীয় সন্তান প্রসবের জন্য তিনি বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন। সিজার করে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি। শুক্রবার তাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বাড়ি গিয়ে দেখা যায় সিজারের জায়গা থেকে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে , সেই সঙ্গে পেটে অসহ্য ব্যথা। এমনকি সেই জায়গাই সঙ্ক্রমণ শুরু হওয়ায় রক্তে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় বলে মৃতার পরিবারের দাবি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকালে ওই প্রসূতিকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু রাত্রি দুটো পর্যন্ত তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। এমনকি চিকিৎসা চাইতে গেলে কর্তব্যরত নার্সরা রোগীর পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রোগীর পরিজনদের।
এরপর রবিবার সকালে হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই প্রসূতির। সেই খবর জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর পরিবারের লোকজন ।
বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সামনে রোগীর পরিজনরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
মৃতার মামা ছোটন হাজরার অভিযোগ, ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার জন্যই তাদের রোগীর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসার গাফিলতি হয়েছে। সন্তান প্রসবের পর যে অংশ বাদ দেওয়া হয়, সেটা হয় নি। সেলাই ঠিক হয় নি। সেলাইয়ের জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। আর তাতে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ পাওয়া যায়।
মৃতার স্বামী সুজয় হাজরার অভিযোগ, “সন্তান প্রসবের পর ঠিকঠাক সেলাই করা হয়নি ফলে প্রচুর রক্তপাত হয়েছে। সেলাইয়ের জায়গা পচে গিয়ে রক্তে দুর্গন্ধ এবং সংক্রমণ ছড়ায়।”
গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।