দেবশ্রী মজুমদার, শান্তিনিকেতন : ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে শান্তিনিকেতনে মিছিলে হাঁটলো আউল বাউল ও হস্তশিল্পীর দল। তাঁদের দাবি, স্বার্থ পর দৈত্যর বাগান করতে পৌষমেলা ধ্বংস করা যাবে না।রবিবার ভুবনডাঙার নিশা হোটেল মোড় থেকে উপাসনা গৃহের পাশ দিয়ে হ্যাণ্ডিক্রাফ্ট বাজার মোড়ে এই মিছিল শেষ হয়। বাউলরা গান গাইতে গাইতে মিছিলে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে প্রতিবাদে সামিল হন। অষ্টম দাস বাউল বলেন, যখন পনেরো বছর বয়স তখন থেকে এই মেলায় আসছি।আজ বয়স পঞ্চাশ হলো। খুব খারাপ লাগছে এই মেলা বন্ধ করে দিতে চাইছেন বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ কুমার চক্রবর্তী। এর ফলে সবার প্রভূত ক্ষতি হবে। হস্ত শিল্পীরা বলেন, কুড়ি সালে পৌষ মেলা বন্ধ ছিল কোভিডের কারণে। একুশে অনেক কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা হস্তশিল্পী ও লোক শিল্পীরা আজ পথে নামতে বাধ্য হয়েছি। কারণ কাঁটা তার দেওয়ালে দেওয়ালে ঘিরে দেওয়া হয়েছে মেলার মাঠ। উল্লেখ্য, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট রাজি পৌষমেলার জন্য মেলার মাঠ ভাড়ায় দিতে বোলপুর পুরসভাকে। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের উপর ঝুলে আছে পৌষমেলা।
পৌষ মেলা নিয়ে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট তাদের অবস্থান স্পষ্ট করলেও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ চুপ। তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট না করায় পৌষ মেলা কিছুটা দোলাচলে। ১২৬ বছরের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা করবার আবেদন জানিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও শান্তিনিকেতন ট্রাষ্টকে দুটি পৃথক চিঠি দিয়েছিল বোলপুর পৌরসভা। যদিও তার আগেই শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে চিঠি পাঠিয়ে অবিলম্বে পৌষ মেলা করবার প্রস্তুতি শুরু করবার আবেদন জানিয়েছিল বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি এবং স্থানীয় শিল্পীরা।
বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে পাঠানো চিঠিতে পৌর প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারপারসন পর্ণা ঘোষ লেখেন “আমাদের এই অনুরোধ যে আমরা বোলপুরবাসী ও পুরসভা শান্তিনিতেন ট্রাস্টের নিয়ম ও নির্দেশ অনুযায়ী মেলার একশো-পচিশ বর্ষের সমাপ্তি উৎসবটি করতে চাই। শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট যেভাবে কুড়ি হাজার টাকা দিয়ে মেলার মাঠ ব্যবহার করেন, আমরাও সেই অর্থ দিতে প্রস্তুত। মেলার পরিচ্ছন্নতা, সুরক্ষা ইত্যাদির দায়িত্ব আমাদের। গ্রীন ট্রাইবুনালের সব নির্দেশ পালন করা হবে। আমরা ছয় দিন মেলার পর মাঠ ফেরৎ দেব। এই মেলা কোভিড বিধি অনুসরণ করেই হবে। আপামর বাঙালির এই মেলার প্রতি অনুরাগ মনে রেখে আপনি আমাদের এই মেলার জন্য ভাড়ার বিনিময়ে মাঠ ব্যবহারে অনুমতি দিয়ে বাধিত করুন। আমরা ট্রাস্টের সঙ্গেই এই মেলা করতে চাই যাতে মেলার ঐতিহ্য বজায় থাকে।”