দেবশ্রী মজুমদার
শান্তিনিকেতন: রাত পোহালেই পৌষ উৎসব বিশ্বভারতীতে। কিন্তু মেলা নেই। অথচ ১৮৮৮ সালে ২০ মার্চ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ট্রাস্ট দলিল অনু্যায়ী শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের মাধ্যমে এই মেলা সংগঠিত করার কথা। প্রাকৃতিক বিপর্যয় তথা তেতাল্লিশে দুর্ভিক্ষ, সাতচল্লিশে স্বাধীনতার প্রাক্কালে সাম্প্রদায়িক হানাহানির আশঙ্কায় এই মেলা স্থগিত হয়। বিগত দুইবছরে কোভিড সঙ্ক্রমণের কারণে এই মেলা বন্ধ থাকে। তবে একুশে যেভাবে মেলা বন্ধ করে দেওয়া হলো, তার দৃষ্টান্ত আগে ছিল না। আর এইজন্য সবাই দুষছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকেই।
ছয়ই পৌষ বুধবার রাত নটায় বৈতালিকের মধ্য দিয়ে কবির আশ্রমে শুরু পৌষ উৎসব। সাতই পৌষ ভোর পাঁচটা তিরিশে ফের বৈতালিক, সকাল ছটায় শান্তিনিকেতন গৃহে সানাই যথারীতি বাজবে। সকাল সাড়ে সাতটায় ছাতিম তলায় উপাসনা হবে। সন্ধ্যা ছটায় উদয়ন বাড়িতে আলোকসজ্জাও হবে। পর দিন সকাল সাড়ে আটটায় আম্রকুঞ্জে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উৎসব হবে। নয় পৌষ আম্রকুঞ্জে পরলোকগত আশ্রমবন্ধুদের স্মৃতিবাসর, হবিষান্য হবে এবং ওই দিন বিকেল পাঁচটা তিরিশে উপাসনাগৃহে খ্রিষ্টোৎসব পালিত হবে।
মেলা ছাড়াই শান্তিনিকেতনে এই একশো সাতাশ তম পৌষ উৎসব। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গেছে, ১৮৪৩ সালে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ঠিক করলেন, দীক্ষিত ব্রাহ্মদের নিয়ে একটি মেলা করবেন।১৮৪৫-এর ৭ পৌষ, কোলকাতার অদূরে মেলা বসল গোরিটির বাগানে। পরে ১৮৬২ সালে বোলপুরে জনবিরল প্রান্তরের মধ্যে দুটি নিঃসঙ্গ ছাতিম গাছের তলায় মহর্ষি সন্ধান পেলেন তাঁর শান্তিনিকেতনের।পরে রায়পুরের জমিদার সিংহ পরিবারের কাছ থেকে মৌরসীস্বত্বে কিনে নিলেন ।পরে ১৮৮৮ সালে ২২ মার্চ মহর্ষি শান্তিনিকেতন ট্রাস্টডিড করে লিখলেন, ‘‘ধর্মভাব উদ্দীপনের জন্য ট্রাষ্টীগণ বর্ষে বর্ষে একটি মেলা বসাবার চেষ্টা ও উদ্যোগ করিবেন।’’ যে ডিডে পৌষ মেলা করার নির্দেশ রয়েছে।