পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: দাস ব্যবসায় যুক্ত থাকার কারণে পর্তুগালের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন পর্তুগিজ প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো ডি সুসা। একইসঙ্গে ট্রান্স-আটলান্টিক দাস বাণিজ্যে পর্তুগাল যে ভূমিকা পালন করেছিল, তার দায়ও দেশের নেওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ ইউরোপীয় কোনও দেশের নেতা হিসেবে জাতীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দিলেন পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো ডি সুসা।
১৫ শতক থেকে ১৯ শতকের মধ্যে ৬০ লক্ষ আফ্রিকানকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং পর্তুগিজ জাহাজে করেই আটলান্টিক মহাসাগরজুড়ে জোরপূর্বক তাদেরকে পরিবহন করা হয়েছিল। পরে অপহৃত এসব আফ্রিকানদের বেশিরভাগকে প্রাথমিকভাবে ব্রাজিলে দাস হিসেবে বিক্রি করা হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পর্তুগাল তার অতীত সম্পর্কে খুব কমই মন্তব্য করেছে এবং দক্ষিণ ইউরোপীয় এই দেশটির স্কুলেও দাসপ্রথার সঙ্গে পর্তুগালের ভূমিকা সম্পর্কে খুব কমই শেখানো হয়।
বরং দেশের ঔপনিবেশিক যুগ নিয়ে গর্ব করে থাকেনন পর্তুগিজরা। মূলত ঔপনিবেশিক যুগে অ্যাঙ্গোলা, মোজাম্বিক, ব্রাজিল, কেপ ভার্দে, পূর্ব তিমুরসহ বহু দেশের পাশাপাশি ভারতের বেশ কিছু অংশও পর্তুগিজ শাসনের অধীনে ছিল। ১৯৭৪ সালের ‘কারনেশন’ বিপ্লব পর্তুগালে একনায়কতন্ত্রের পতন ঘটিয়েছিল। আর সেই বিপ্লবের বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট সুসা বলেন, দাস বাণিজ্যে ভূমিকার কারণে পর্তুগালের ক্ষমা চাওয়া উচিত। যদিও এ বিষয়ে তিনি কোনও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেননি।
উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য দেশের ‘দায়িত্ব গ্রহণ’ করা উচিত জানিয়ে প্রেসিডেন্ট সুসা বলেন, ‘ক্ষমা চাওয়া সবচেয়ে সহজ কাজ। আপনি ক্ষমা চান, এরপর ফিরে চলে যান এবং এতেই আপনার কাজটি হয়ে যায়।’ আফ্রোলিঙ্ক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্ল্যাক প্রফেশনালস ইন পর্তুগাল’র প্রতিষ্ঠাতা পাওলা কার্ডোসো বলেছেন, প্রেসিডেন্ট সুসার এই মন্তব্য ‘প্রতীকী’ হলেও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তারা দাস বাণিজ্যের এই বিষয়টিকে অন্তত সামনে নিয়ে এসেছেন।