পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: সবে মাত্র ৩ দফা ভোট সম্পন্ন। তাতেই দেশের শেয়ার বাজারের এই হাল? ২০১৪ সালের এই ভোট মরশুমে তো শেয়ার বাজার তরতর করে উঠেছিল। সেইসময় অবশ্য দেশজুড়ে বিরাট মোদি হাওয়া ছিল। এবার কি তাহলে মোদি-ম্যাজিক ফিকে, তাও আবার অযোধ্যায় বিরাট রাম মন্দির উদ্বোধনের পরেও? এমনিতেই এই তিন দফা পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েক’টি রাজ্য ছাড়া সেভাবে মানুষকে ব্যাপকভাবে ভোটদান করতে দেখা যায়নি। ভোট দানে একটা অনীহা ভাব। তারই প্রভাব পড়েছে শেয়ার বাজারে?
নাকি, তিন দফার পরই শেয়ার বাজার কারবারিরা বুঝে গিয়েছেন, এবারের ভোট মোদির পক্ষে খুব কঠিন হতে চলেছে। না হলে একদিনে সর্বোচ্চ ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার পতন হতে পারে। এবার বিজেপির স্লোগান ছিল—৪০০ আসন পার করার। বিজেপি যদি সত্যিই খুব ভাল জায়গায় থাকবে তাহলে শেয়ার বাজারের এই হাল কেন? সাধারণত শেয়ার বাজারের সাথে সরকার উত্থান-পতনের একটা নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। ব্যবসায়ী মহল কি তাহলে মোদির উপর থেকে বাজি ছেড়ে দিচ্ছে। ফিলিপক্যাপিটাল ইন্ডিয়ার বিশ্লেষকরা একটি নোটে তা নিয়েই আশংকাপ্রকাশ করে লিখেছেন, ‘আমরা মনে করি যে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন জোটের জন্য ৪০০ আসন অসম্ভাব্য বলে মনে হচ্ছে…।
’ তবে তারা নিশ্চিত যে মোদি সরকারই ফের ক্ষমতায় আসছে, কিন্তু এই বিপুল সংখ্যক আসন তারা পাবে না। তারা লিখেছে, ‘এখনও পর্যন্ত ভোটের হার কিছুটা কম। যদিও এটি কয়েকটি নির্বাচনী এলাকাকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে এটি বিজেপির ক্ষমতায় ফিরে আসার ব্যাপক প্রত্যাশিত ফলাফলে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে সেই সম্ভাবনা নেই।’ তবে এটা ঠিক যে, দালাল স্ট্রীট বুঝে গিয়েছে, মোদির পক্ষে এবার লড়াইটা একপেশে হচ্ছে না। বাজারে অর্থনীতি বিষয়ক কোনও নেতিবাচক প্রভাব না তাকা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার সেনসেক্স ও নিফটি ১.৫ শতাংশ পতন হয়েছে।
সেনসেক্স ৭৩ হাজারের নীচে নেমে গিয়েছে। আর নিফটি সূচক নেমে গিয়েছে ২২ হাজারেরও নীচে। আজ মিডক্যাপ ও স্মলক্যাপ সূচকগুলিতে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। ইন্ডিয়া ভিক্স প্রায় ৭ শতাংশ পতনের সঙ্গে পড়েছে এদিন। এক বছরের সর্বোচ্চে তলায় বন্ধ হয়েছে এই সূচক। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে সেনসেক্স ১০৬২ পয়েন্টের পতনের সঙ্গে ৭২,৪০৪ পয়েন্টে এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিফটি ৩৪৫ পয়েন্টের পতনের সঙ্গে ২১,৯৫৭ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে।
আজকের অধিবেশনে বিনিয়োগকারীদের ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির বাজার মূলধন ৩৯৩.৬৮ লাখ কোটি টাকায় বন্ধ হয়েছে। যা গত ট্রেডিং সেশনে ৪০০.৬৯ লক্ষ কোটি টাকা ছিল। আজকের ট্রেডিং সেশনে বিনিয়োগকারীরা ৭ লাখ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এদিনের ট্রেডিং শেষে লেনদেনে মোট ৩৯৪৩টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে ৯২৯টি শেয়ার লাভে বন্ধ হয়েছে এবং ২৯০২টি শেয়ার লোকসানে ক্লোজিং দিয়েছে। ১১২টি শেয়ারের দামে কোনও পরিবর্তন হয়নি।