পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ‘চাচা আপন জান বাঁচা’-ই যে অজিত পাওয়ারের জীবনের মূল মন্ত্র সেকথা কাকা (চাচা) শরদ পাওয়ারকে আগেও বুঝিয়েছেন ভাইপো অজিত পাওয়ার। একদিকে ‘পাওয়ার’ (ক্ষমতা)-র জন্য কাকা শরদের সঙ্গে যে কোনও সময় সম্পর্ক ভেঙে দিতে রাজি ছিলেন অজিত পাওয়ার। অন্যদিকে বিধায়ক কিনে, দল ভাঙিয়ে সরকার গড়ায় সিদ্ধহস্ত বিজেপি। এই দুইয়ে মিলে যা হওয়ার কথা ছিল, শেষ পর্যন্ত হলও তাই। উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার বিনিময়ে কাকার দল এনসিপি থেকে ৯ জন বিধায়ককে ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়ে একনাথ শিন্ডের ফর্মুলায় হেঁটে নিজের দলে ভাঙন ধরালেন অজিত পাওয়ার।
দলে উপযুক্ত পদ চেয়েছিলেন অজিত পাওয়ার। কিন্তু বিরোধী দলনেতার পদ ছাড়া কিছু পাননি তিনি। উল্টে সম্প্রতি নিজের কন্যা সুপ্রিয়া সুলেকে এনসিপির কার্যকরী সভাপতির পদ দিয়েছেন শরদ পাওয়ার। বারবার হুঁশিয়ারি দিয়েও কাজ হয়নি দেখে বিজেপির সঙ্গেই হাত মেলালেন অজিত।
এই ঘটনার পর এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার বলেন, ৬ জুলাই একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল, সেখানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই বেশ কয়েকজন বিধায়ক দল ছেড়েছেন। তিনি বলেন, এই বিধায়কদের অনেকেই তাঁকে জানিয়েছিলেন যে বিজেপির পক্ষ থেকেই তাদেরকে দল ভাঙার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
শরদ বলেন, এমন পরিস্থিতি আমি আগেও দেখেছি। তখনও ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম। এবারও সেটাই হবে। তবে যারা দলে ভাঙন সৃষ্টির চেষ্টা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভাইপোর বিশ্বাসঘাতকা প্রসঙ্গে শরদ পাওয়ার বলেন, আমি বলব না যে আমার পরিবারে ভাঙন ধরেছে। এটা পারিবারিক বিষয় নয়। এটা মানুষের সমস্যা। যারা গেছে, তাদের ভবিষ্যত নিয়ে আমি চিন্তিত।
প্রধানমন্ত্রীকে খোঁচা দিয়ে শরদ বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন এনসিপি দূর্নীতির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু আজ এনসিপির বিধায়করা তাঁর দলের মন্ত্রীসভায় যোগ দিয়েছে। তার মানে এনসিপির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যে। দূর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
এই ঘটনার পর তড়িঘড়ি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী) নেতা সঞ্জয় রাউত। তিনি বলেন, শরদ পাওয়ারের সঙ্গে কথা হয়েছে। শরদ পাওয়ার জানিয়েছেন, মানুষের সমর্থন রয়েছে তাঁর সঙ্গে। উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াবেন শরদ পাওয়ার।
নাম না করে বিজেপির দিকে আঙুল তুলে সঞ্জয় বলেন, কিছু মানুষ মহারাষ্ট্রের রাজনীতি ধুয়ে মুছে সাফ করে দিতে চাইছে। তাদেরকে তাদের কাজ করতে দিন। মানুষ এই খেলা বেশিদিন সহ্য করবে না।
বিজেপির বিধায়ক কেনার রাজনীতি প্রসঙ্গে রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিব্বল বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমেরিকায় বসে যে গণতন্ত্রের গল্প শুনিয়েছিলেন, এটা তারই নমুনা।