বিশেষ প্রতিবেদন: এবার বিপরীত দিকে ঘুরবে পৃথিবী! দীর্ঘ ১৪ বছর পর আবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে মহাজাগতিক বিশ্বে। এমনটাই জানিয়েছেন গবেষকরা। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন পৃথিবীর কেন্দ্রে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ঘূর্ণন প্রক্রিয়া। এবার বিপরীত দিকে ঘুরতে পারে পৃথিবী। সেইরকম ইঙ্গিত মিলেছে তাদের গবেষণায়।
বিজ্ঞানীদের কথায়, এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল ২০০৯ সালে। ফের সেই মহাজাগতিক ঘটনা ঘটতে চলেছে। দিক পরিবর্তনের সময়েই পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কোরের ঘূর্ণন বন্ধ হযে যায়। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর স্তর তিনটি ভাগে বিভক্ত। পৃথিবীর মূল অংশ প্রায় ৭ হাজার কিলোমিটার প্রশস্ত। এই মহাজাগতিক গবেষণাটি সম্প্রতি নেচার জিওসায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় জানা গেছে, পৃথিবীর কেন্দ্র বিন্দুতে অর্থাৎ ভূগর্ভে কি ঘটছে, তার সম্পর্কে মানুষ সেভাবে কিছুই জানতে পারে না। কিন্তু ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ হওয়া কম্পন আমরা কিছুটা অনুভব করতে পারি।
সম্প্রতি একটি নতুন গবেষণায় জানা গেছে, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কোরটি ঘূর্ণন বন্ধ করে দিয়েছে। এরপরে বিপরীত দিকে তাঁর ঘূর্ণন অভিমুখ স্থির করেছে। নেচার জিওসায়েন্সে প্রকাশিত সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে অভ্যন্তরীণ কোর ঘূর্ণন বিরাম লাভ করে। তারপর তা সামঞ্জস্য বজায় রেখেই ভিন্ন দিকে অভিমুখ বদলায়।
তথ্য অনুযায়ী, অভ্যন্তরীণ কোরটি পৃথিবী পৃষ্ঠের সাপেক্ষে সামনে বা পিছনে দোলনের মতো ঘোরে। দোলের একটি চক্র প্রায় সাত দশকের। অর্থাৎ ৩৫ বছরে দিক পরিবর্তন করে। ১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে পরিবর্তিত হয়েছিল। এর পরবর্তী ২০৪০-এর দশকের মাঝামাঝি দিক পরিবর্তন হবে। পৃথিবীর স্তরগুলি তিনটি ভাগে বিভক্ত। তা হল- ভূত্বক, আবরণ ও কোর। পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কোর নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে ১৯৩৬ সালে। ভূমিকম্প থেকে ভূমিকম্পের তরঙ্গ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গবেষকরা নানাবিধ তথ্যে উপস্থিত হয়।
পিকিং ইউনিভার্সিটির একটি দল ১৯৯৫ এবং ২০২১ সালের মধ্যে বেশিরভাগ ভূমিকম্প বিশ্লেষণ করেছে। সেই বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০০৯ সালের কাছাকাছি কোনও এক সময় কোরটি ঘূর্ণন বন্ধ করে দেয় এবং ঘূর্ণনের দিক পরিবর্তন করে।
গবেষকদের কথায়, কেন্দ্রের ঘূর্ণন দিনের দৈর্ঘ্যের পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এটি পৃথিবীকে তার অক্ষের উপর ঘুরতে সাহায্য করে। এই গবেষণা অন্যান্য গবেষককে অনুপ্রাণিত করবে। এখনও পর্যন্ত এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে বিপরীত দিকে ঘূর্ণন মানুষের জীবনে কোনও প্রভাব ফেলবে।
পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কোর প্লুটোর আকারের একটি গরম লোহার বল, বাকি গ্রহের মতো একই দিকে ঘোরানো বন্ধ করে দিয়েছে এবং এমনকি অন্য দিকেও ঘুরতে পারে। গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
পৃথিবীর উপরিভাগ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার কিলোমিটার নীচে অবস্থান জীব জগতের। তবে পৃথিবী স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারে, কারণ ‘গ্রহের মধ্যে গ্রহ’ তরল ধাতব বাইরে কোরে ভাসছে। তবে গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ‘আমাদের অভ্যন্তরীণ পৃথিবীর চিত্র এখনও অস্পষ্ট’, তাই আগামীদিনে আরও বিস্ময়কর ঘটনা অপেক্ষা করে আছে।