পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: নিউজক্লিকের দায়ের করা বিশেষ ছুটির আবেদনের জরুরি শুনানি বিবেচনা করতে সম্মতি দিল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার শীর্ষ আদালত নিউজক্লিক প্রতিষ্ঠাতা প্রবীর পুরকায়স্থ এবং সিনিয়র সাংবাদিক অমিত চক্রবর্তীর দায়ের করা বিশেষ ছুটির আবেদনের জরুরি শুনানি বিবেচনা করার সম্মতি দেয় শীর্ষ আদালত।
প্রসঙ্গত, প্রবীর পুরকায়স্থ ও অমিত চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ‘বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন’ (ইউএপিএ) বা সন্ত্রাসী আইনে মামলা দেয় পুলিশ। তার বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করেন তাঁরা। কিন্তু, দিল্লি হাইকোর্ট তাঁদের সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। এমনকী ইউএপিএ মামলার বিরুদ্ধে আবেদনও শোনেনি হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন প্রবীর পুরকায়স্থ ও অমিত চক্রবর্তী।
প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের অধীনে মামলা দায়ের হয়েছে। বর্ষীয়ান আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন কপিল সিব্বল। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিব্বল বলেন, ‘মাননীয় বিচারপতি আমি মামলাকে ‘আউট অফ টার্ন’ বলছি। এটি নিউজ ক্লিকের বিষয়। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি একজন ৭০ বছর বয়সী সাংবাদিক। আমি বিষয়টির দ্রুত তালিকা চাইছি।’ বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চকে এই কথা জানিয়েছেন কপিল সিব্বল।
এদিকে নিজজক্লিকের সাংবাদিকদের উপর পুলিশি দমন পীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার সাংবাদিক মহল। মন্ডার প্রেসক্লাব অফ ইন্ডিয়ার বাইরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে তারা। বাকস্বাধীনতা এবং পেশার কথা উল্লেখ করে সাংবাদিকদের গ্রুপগুলি সোমবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকেও চিঠি দিয়েছে৷
চিঠিতে ‘নিউজ ক্লিকের উল্লেখ করা হয়নি। লেখা হয়েছে, ‘বাক স্বাধীনতা, পেশা, জীবিকা রক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সর্বোচ্চ সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ হিসাবে আপনার হস্তক্ষেপের অনুরোধ করছি।’ সংবাদমাধ্যমের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসগুলি বাজেয়াপ্ত করার কথাও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিটি প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান উইমেনস প্রেস কর্পস, দিল্লি ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্ট, কেরালা ইউনিয়ন অফ ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট, ডিজিপাব (ডিজিটাল নিউজ মিডিয়ার শিল্প সংস্থা), ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাব, ভেটেরান জার্নালিস্ট গ্রুপ এবং অল ইন্ডিয়া লইয়ার্স ইউনিয়ন দ্বারা সমর্থন করা হয়েছে।
নিউজ ক্লিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠা নিয়ে বিবিসির সিনিয়র রিপোর্টার সতীশ জ্যাকব সমাবেশে বলেছেন, ‘এই ধরনের অভিযোগগুলি কাল্পনিক। দাবি, চিন থেকে নিউইয়র্ক হয়ে টাকা এসেছে! এর চেয়ে ভালো রসিকতা আর হয় না।”
ক্যারাভান ম্যাগাজিনের এক্সিকিউটিভ এডিটর হরতোষ সিং বল বলেন, কেন নিউজ ক্লিকের সাংবাদিকদের টার্গেট করা হয়েছে। একটি সংবাদ প্রতিষ্ঠানের মৃত্যু মানেই সাংবাদিকতার মৃত্যু।
‘দ্য হিন্দু’র প্রাক্তন সাংবাদিক নীনা ব্যাস বলেন, চোখের সামনে গণতন্ত্রের মৃত্যু হতে দেখতে পাচ্ছি। ২০২৪ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে যদি এই সরকারকে বহিষ্কার করা না হয়, তাহলে ইউপিএ আইনের সুযোগ নিয়ে তা অপব্যবহার করা হবে।’ (