আহমদ আবদুল্লাহ: ভারত বা হিন্দুস্তান বিকশিত হয়েছে বহু ধর্ম এবং সভ্যতাকে নিয়ে। ভারতের ইতিহাস ও সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে বিভিন্ন সভ্যতার অবদানে। কিন্তু ইদানীং ইতিহাস থেকে এবং স্থান নাম থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে মুসলিম নামসমূহ। খ্রিস্টানরাও খুব ভালো নেই। মণিপুরে সদ্য সদ্য ধ্বংস করা হয়েছে কয়েকশত চার্চ। দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন করছেন মোদি সরকার। এই কৃতিত্ব তাঁকে অবশ্যই দিতে হবে। কিন্তু জি-২০’তেও দেখা গেল হিন্দুত্ববাদেরই আধিপত্য। কেবল হিন্দুধর্মেরই শোকেস করা হল বিশ্বনেতাদের সামনে।
কিন্তু বাদ গেল মুসলিম ও খ্রিস্টান ইতিহাস ও সংস্কৃতির কথা। এমনকী গায়েব তাজমহল, লালকেল্লা বা কুতুবমিনারও!
একের পর এক লাইন দিয়ে বিশ্বনেতাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলাদা আলাদা করে ফটো সেশন করতে আহ্বান করা হয়। তাঁরা এক এক করে প্রধানমন্ত্রী মোদিজির সঙ্গে ফটো তোলার জন্য উপস্থিত হন। ছিলেন বাইডেন, ঋষি সুনক, শেখ হাসিনা, মুহাম্মদ বিন সালমান-সহ সম্মেলনে আগত প্রত্যেক নেতা।
এমন দৃশ্য কিন্তু অনান্য সম্মেলনে দেখা যায় না। সেখানে তোলা হয় গ্রুপ ছবি। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মোদিজির নেতৃত্বে শীর্ষ নেতৃবৃন্দের ছবি তোলায় পরিবর্তন এলো।
অবশ্য নরেন্দ্র মোদিজিকে ক্রেডিট দিতেই হবে। কারণ এই শীর্ষ সম্মেলনে এসেছিলেন বিভিন্ন দেশের প্রধান বা দ্বিতীয় প্রধান নেতারা। এঁদের মধ্যে ছিলেন খ্রিস্টান, মুসলিম, বৌদ্ধধর্মের অনুসারীরা। বিশ্বনেতাদের ছবি তোলার জন্য মোদি যেখানে আহ্বান করেন তার পৃষ্ঠদেশ বা প্রেক্ষাপটে ছিল কোনারকের প্রখ্যাত সূর্যমন্দিরের রথের একটি বিশাল চাকা। ওই চাকার মধ্যে ও আশপাশে রয়েছে বেশকিছু নারী-পুরুষের অ্যাডাল্ট কাজে নিযুক্ত মূর্তি। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে লেখা আছে, একসময় ভারতে যে প্রবল যৌন স্বাধীনতা ছিল কোনারকের সূর্যমন্দিরে রয়েছে তারই নজির।
সূর্য দেবতার পুজোর জন্য রথের আকারে এই মন্দিরটি গড়ে তোলা হয়। সেই সূর্যমন্দিরের রথচক্রের পাদদেশে প্রধানমন্ত্রী মোদিজি ছবি তুললেন আলাদা আলাদা করে প্রত্যেক বিশ্বনেতার সঙ্গে। ভারত যে সেক্যুলার হিন্দু দেশ তা তিনি শুধু দেশেই নয়, বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের সামনেও প্রমাণ করলেন। পরে অবশ্য নালন্দার স্তূপের সামনেও রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কিছু রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে ছবি তোলার সেশন করা হয়। সংবিধানের চেতনা বিরোধী এই হিম্মতের জন্য ভক্তরা অবশ্যই মোদিজির উদ্দেশ্যে ‘সাধু সাধু’ রব উচ্চারণ তুলবেন।