পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: দ্বিতীয় বার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট পদে বসেছেন ইমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ। তার পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক ট্যুইট বার্তায় ম্যাক্রোঁকে শুভেচ্ছা বার্তা জানান। বর্তমানে ইউরোপে সফরে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ফ্রান্সের নির্বাচনের পরে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদে ইমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ বসার পরে মোদিই হবেন প্রথম প্রথম রাষ্ট্রনায়ক যিনি ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এই বৈঠক ফ্রান্স ও ভারতের মধ্যে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে বলেই মনে করা হচ্ছে। বুধবার মোদি সঙ্গে ম্যাক্রোঁর বৈঠকে বসার দিন।
গত ২৪ এপ্রিল জয়ী হওয়ার পর ফরাসী নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চলেছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে আবহে এই বৈঠক যে তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনদিনের সফরে ইউরোপ সফরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। কোপেনহেগেন হয়ে নরেন্দ্র মোদি ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করতে এলসি প্রাসাদে আসবেন। সেখানে একটি নৈশভোজের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেখানে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা। চার থেকে পাঁচ ঘন্টা এই বৈঠক চলতে পারে বলে খবর। দুই রাষ্ট্রনায়কের মধ্যে সদর্থক আলোচনাকে ঘিরে ম্যাক্রোঁর ভারত সফরের আশা জোরালো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ফ্রান্সের রাজনীতিতে অকটি অলিখিত রীতি রয়েছে। নির্বাচনে জয়ী হয়ে যেই নেতা ফরাসি প্রেসিডেন্ট হন, তিনি আন্তর্জাতিক নেতাদের মধ্যে সর্বপ্রথম জার্মানির চ্যান্সেলরের সঙ্গে দেখা করেন। তবে ২০২২ সালে সেই রীতি ভাঙছে। বর্তমানে ইউরোপে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সফরকালেই তিনি প্যারিসে যাবেন কিছুক্ষণের জন্য। ‘বন্ধু’ ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করতেই নমোর এই ঝটিকা সফর। পুননির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম আন্তর্জাতিক নেতা হিসেবে মোদির সঙ্গেই দেখা করতে চলেছেন ম্যাক্রোঁ।
এর আগে ফ্রাসোঁয়া ওলাদঁ যখন ২০১২ সালে ফরাসি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন, তিনি জার্মানি যান জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের সঙ্গে দেখা করতে। ম্যাক্রোঁ নিজে যখন প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন, তিনিও সেই একই কাজ করেছিলেন। তবে এবার তিনি সবার আগে মোদির সঙ্গে দেখা করতে চলেছেন।
উল্লেখ্য, প্যারিসে কূটনৈতিক আলোচনার এজেন্ডা নিয়েই প্রধানমন্ত্রী মোদির এই সফর। রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রোঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির বৈঠকের পর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দুই রাষ্ট্রনায়কের আলোচনায় স্থান পাবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে। কারণ উভয় দেশই অবিলম্বে এই সহিংসতা বন্ধের পক্ষে। মোদি ও ম্যাক্রোঁ দুজনেই বিগত দিনে ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এই অঞ্চলে শান্তি পুনরুদ্ধারের বিষয়ে কথা বলেছেন। এছাড়াও আলোচনায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে যোগাযোগের সমুদ্রপথগুলিকে সুরক্ষিত করতে উভয় দেশ একসঙ্গে সহযোগিতা করবে।
উল্লেখ্য, প্যারিসের সঙ্গে ভারত ও ফ্রান্সের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সহযোগিতা রয়েছে যা ভারতীয় নৌবাহিনীকে স্করপেন শ্রেণীর সাবমেরিন তৈরি করতে এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীকে ৩৬টি রাফালে যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে সহায়তা করে। এখনও পর্যন্ত ৩৫টি যুদ্ধ বিমান ভারতে সরবরাহ করেছে ফ্রান্স। ফ্রান্স শুধু ভারতে সাফরান বিমানের ইঞ্জিন তৈরি করতে ইচ্ছুক নয়, হাই-টেক এয়ার টু এয়ার এবং এয়ার টু সারফেস প্রিসিশন মিসাইলও তৈরি করতে ইচ্ছুক।