পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ‘মোদি পদবি’ বিতর্ক মামলায় গুজরাত হাইকোর্টে স্বস্তি পেলেন না কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। দুই বছরের সাজাই বহাল রাখল হাইকোর্ট। শুক্রবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির ‘মোদি পদবি’ মন্তব্যে একটি ফৌজদারি মানহানির মামলায় তার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার উপর স্থগিতাদেশের আবেদন খারিজ করে দিল আদালত। তবে গুজরাত হাইকোর্ট রাহুল গান্ধির আবেদন খারিজ করে দিলেও, এখনই তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে না। আগেই তাঁর কারাদণ্ড সাময়িকভাবে স্থগিত রেখেছে সুরাটের এক আদালত। তবে, ২ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার কারণে, এখনই সাংসদ পদ ফিরে পাচ্ছেন না রাহুল গান্ধি, সেইসঙ্গে আগামী ৬ বছর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না তিনি।
এআইসিসি’র সাধারণ সম্পাদক কেসি বেনুগোপাল বলেছেন, ‘মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধির দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আবেদন খারিজ করেছে আদালত। গুজরাত হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব’।
শুক্রবার গুজরাত হাইকোর্টে রাহুল গান্ধির আবেদনের শুনানি হয়েছে হেমন্ত প্রচ্ছকের একক বিচারপতির বেঞ্চে। বেঞ্চ জানিয়েছে, রাহুল গান্ধির দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আদেশ স্থগিত না করা হলে, তাঁর প্রতি কোনও অবিচার করা হবে না। বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছক বলেন, ‘দোষী সাব্যস্তের আদেশ স্থগিত করার কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। নিম্ন আদালতের আদেশ ন্যায্য, যথাযথ এবং আইনগত দিক থেকে সঠিক। এই আদেশে হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন নেই।
বিচারপতি প্রচ্ছক জানান, অত্যন্ত বিরল ক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আদেশ স্থগিত করা হয়। তবে, তা করা হয় একেবারেই ব্যতিক্রমী মামলার ক্ষেত্রে। বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, রাহুলের বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি ফৌজদারি মামলার বিচার চলছে। বর্তমান মামলাটির পরেও, তাঁর বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বীর সাভারকরের নাতিও এরকম একটি মামলা দায়ের করেছেন। রাহুল গান্ধিকে দোষী সাব্যস্ত করাটা কোনও অন্যায় নয়। তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করার রায়টি ন্যায়সঙ্গত এবং সঠিক। তাই তাঁর আবেদনটি খারিজ করা হল।
গত ২৩ মার্চ এক ফৌজদারি মানহানি মামলায় রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন সুরাটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এইচএইচ ভার্মা। রাহুল গান্ধিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
এরপর সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুরাটের অতিরিক্ত দায়রা আদালতে আবেদন করেন রাহুল। ৩ এপ্রিল দায়রা আদালত তাঁর সাজা বহাল রেখেছিল। এদিন দায়রা আদালতের রায়েই শিলমোহর দিল গুজরাত হাইকোর্ট। এর আগে রাহুল গান্ধিকে অন্তর্বর্তীকালীন সুরক্ষা দিতেও অস্বীকার করেছিল হাইকোর্ট।
রাহুলের সামনে এখন হাইকোর্টের উচ্চতর বেঞ্চে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়, এই আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল। পাশাপাশি কংগ্রেস নেতা সুখজিন্দর রণধাওয়া বলেন, ‘এটি কোনও ধাক্কা নয়। রাহুল গান্ধি আরও শক্তিশালী হয়ে সংসদে ফিরবেন। ২০২৪ সালে কংগ্রেসই সরকার গঠন করবে। এদিনের রায়ের পর, রাহুল গান্ধি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন।’
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার বিধান সৌধ চত্বরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।