পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে দুদিনের সফরে ভারতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। সোমবার সকালে দিল্লি বিমানবন্দরে এসে পৌঁছন তিনি। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে হায়দরাবাদ হাউসে বৈঠক করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা। বৈঠকের পর মোদি বলেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দুই দেশের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি বিশ্বের উন্নতির জন্য একযোগে কাজ করবে ভারত ও জাপান। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে।
বৈঠকের পর জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ভারতের সঙ্গে জাপানের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে ভারতের উন্নতি হবে, সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক দিক থেকেও প্রচুর সুযোগ আসবে জাপানের কাছে। কিশিদা বলেন, গত বছর আমি ঘোষণা করেছিলাম আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ভারতে ৩ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করবে জাপান। সেই লক্ষ্যে আমরা অনেকখানি এগিয়েছি।
প্রসঙ্গত, চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী জোট গড়তে আগ্রহী ভারত-জাপান সহ কোয়াডের দেশগুলি। এই পরিস্থিতিতে চিনকে রুখতেই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিল দুই দেশ। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একাধিক বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করবে ভারত ও জাপান। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যেন স্থিতাবস্থা বজায় থাকে, সেই বিষয়টি সুনিশ্চিত করবে দুই দেশ।
২০২২ সালের জি৭ বৈঠকে আমন্ত্রিত ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। চলতি বছর জি৭য়ের সভাপতির দায়িত্ব পেয়ে আবারও প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আমন্ত্রণ জানালেন প্রধানমন্ত্রী কিশিদা। আগামী মে মাসে জি৭ সম্মেলনে যোগ দিতে জাপানে যাবেন মোদি।
বৈঠকের আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা নয়াদিল্লির রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধির স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। কিশিদা রাজঘাটে ভিজিটরস বুকেও স্বাক্ষর করেন।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে জি ২০র সভাপতিত্ব করছে ভারত। অন্যদিকে জি৭ সংগঠনের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে জাপান। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করার সম্ভাবনা আরও বেশি বলে দাবি করেছেন মোদি। ভারত-জাপান অংশীদারিত্ব প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে বিস্তৃত ক্ষেত্রগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে। প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা ভারত-জাপান বিশেষ কৌশলগত এবং বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উভয় দেশ ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তি চুক্তির অধীনেও স্থির অগ্রগতি করছে। ১৫ বছর আগে জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ভারতে এসেছিলেন। সে সময় তিনি ইন্দো-প্যাসিফিক সহযোগিতার কথা বলেছিলেন।