মুহাম্মদ মুস্তাক আলি, জঙ্গিপুর: আবারও চিকিৎসায় গাফিলতিতে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। এবারেও অভিযোগের তীর সেই জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ডাক্তারবাবুর নামও সেই একই। আবারও চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ উঠল স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অমিতাভ দাসের বিরুদ্ধে। যদিও মৃত প্রসূতির পরিবারের পক্ষ থেকে ডা. অমিতাভ দাসের পাশাপাশি ডা. বাবুল চন্দ্র দে-র বিরুদ্ধেও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। আর প্রসূতির অকাল মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতে জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সামনে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান রঘুনাথগঞ্জ থানার একদল পুলিশকর্মী। তারা বিক্ষুব্ধ জনতাকে বুঝিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন প্রত্যাহার করান।
অবশ্য মৃত প্রসূতি তুলি খাতুনের পিতা নুর হোসেন, ডা. অমিতাভ দাস এবং ডা. বাবুল চন্দ্র দে নামে দুই ডাক্তারবাবুর বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ লিখিতভাবে হাসপাতাল সুপার ডা. সায়ন দাসের হাতে তুলে দেন।
অভিযুক্ত ডাক্তারবাবুদের বক্তব্য জানার জন্য এই প্রতিবেদক তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব না হওয়ায় অভিযুক্ত ডাক্তারবাবুদের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এই সংবাদমাধ্যমও অভিযোগের সত্যতা যাচাই করেনি। উল্লেখ্য, অনেক ঘটনার মত চলতি বছরের গত ৭ সেপ্টেম্বর এই হাসপাতালেই এক সদ্যজাতের মর্মান্তিক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। সে সময় একদল মানুষ অভিযোগ তোলেন যে, হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তারবাবু সিজারের সময় সদ্যজাতের মাথা কেটে দিলে সদ্যজাতের অকাল মৃত্যু হয়। বেশ কিছু মানুষ ওই ডাক্তারবাবুর শাস্তির দাবি করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। অভিযুক্ত ডাক্তারবাবুদের অন্যতম ছিলেন ডা. অমিতাভ দাস। যদিও সেসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেন।
এবারের বিষয়টি ঠিক কি? মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার জঙ্গিপুর পুরসভার ১০ নং ওয়ার্ডের সাহেব বাজারের জনৈক নুর হোসেনের বক্তব্য, প্রসব যন্ত্রনা দেখা দেওয়ায় তার মেয়ে তুলি খাতুন (২৪) কে জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নুর হোসেনের দাবি– ইতিপূর্বে তুলি খাতুন, ডা. বাবুল চন্দ্র দে এবং ডা. অমিতাভ দাসের প্রাইভেট চেম্বারে একাধিকবার চিকিৎসা করিয়েছেন। তার বক্তব্য, নিরাপদ মাতৃত্বের আশা নিয়ে গত ৯ নভেম্বর, মঙ্গলবার তুলিকে জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করা হয়।
সূত্রের বক্তব্য, ওই দিনই বিকেল ৪ টা নাগাদ তুলি খাতুন স্বাভাবিকভাবে একটি সুস্থ পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। নুর হোসেন সেখ জানিয়েছেন– ঘণ্টা খানেক পরেই তার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের দাবি, বিষয়টি ডিউটিরত নার্সদের জানানো হয়। তুলি খাতুনের শারীরিক অবস্থা আরও অবনতির দিকে গেলে সঙ্গে সঙ্গে জানানো হয় ডা. অমিতাভ দাস এবং ডা. বাবুল চন্দ্র দে নামে দুই ডাক্তারবাবুকে। মৃতার পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, বারবার জানানো সত্ত্বেও কর্তব্যরত নার্স বা চিকিৎসক তুলি খাতুনের চিকিৎসার কোনও উদ্যোগ নেননি।
নুর হোসেনের অভিযোগ– চিকিৎসার অবহেলার কারনে তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।