পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আন্তর্জাতিক মঞ্চে নজরকাড়া সাফল্য এল এক ভারতীয় কন্যার ঝুলিতে। সাহিত্যে অনবদ্য সৃষ্টির জন্য আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারে ভূষিত হলেন সাহিত্যিক গীতাঞ্জলি শ্রী। হিন্দি উপন্যাস ‘রেত সমাধি’, ইংরেজি অনুবাদে যা ‘টুম্ব অফ স্যান্ড’- এর (Tomb of Sand), তার জন্য এই পুরস্কার পেলেন গীতাঞ্জলি। এই পুরস্কার পেয়ে অভিভূত গীতাঞ্জলী।
গীতাঞ্জলির লেখা উপন্যাসটির নাম ‘রেত সমাধি’। সেই উপন্যাসটির ইংরেজি অনুবাদ করেন আমেরিকান অনুবাদক ডেইসি রকওয়েল। পুরস্কার পেয়েছে ডেইসির করা বইটির ইংরেজির অনুবাদটি। গীতাঞ্জলি পুরস্কারের অর্থ ৫০ হাজার পাউন্ড ডেইসির সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন।
ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানে ভারত ভাগের প্রেক্ষাপটে একটি পরিবারের উপাখ্যান উঠে এসেছে ‘টুম্ব অব স্যান্ড’ উপন্যাসে। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র উত্তর ভারতের এক অশীতিপর বৃদ্ধা, যিনি দেশভাগের সময় পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে আসেন। কিন্তু পরবর্তীতে পরিবার ও সমাজের হাজার নিষেধ উপেক্ষা করেও ফের সীমান্ত অতিক্রম করে একবার চাক্ষুষ করতে যান নিজের ফেলা আসা জন্মভূমিকে।
গীতাঞ্জলি শ্রী দিল্লির বাসিন্দা। তিনি তিনটি উপন্যাস এবং কয়েকটি গল্প সংকলনের রচয়িতা। ‘টুম্ব অব স্যান্ড’ যুক্তরাজ্যে তার প্রকাশ হওয়া প্রথম বই। পুরস্কার পেয়ে ৬৪ বছরের গীতাঞ্জলি বুকারের মঞ্চে বলেন, আমি কখনই বুকার পাওয়ার স্বপ্ন দেখিনি। ভাবিনি কখনও আমার ভাগ্যে এই পুরস্কার জুটবে। বিশাল এক স্বীকৃতি। আমি অভিভূত, বিস্মিত, সম্মানিত এবং কৃতজ্ঞ।”
আন্তর্জাতিক বুকারের বিচারক প্যানেলের সভাপতি ফ্রাংক ওয়েইন “ভারত এবং দেশভাগ নিয়ে এটি দ্যুতিময় এক উপন্যাস। এর মনোমুগ্ধকর বর্ণনা শৈলী আর তীক্ষ্ণ আবেগের ঢেউ তরুণ ও বৃদ্ধ, নারী ও পুরুষ, পরিবার ও একটি দেশকে সময় পরিভ্রমণ করিয়ে আনবে।”
ফ্রাংক ওয়েইন বলছেন, এর আগে তিনি এমন উপন্যাস আর পড়েননি। তার ভাষায়, ‘প্রাণোচ্ছ্বলতা’ আর ‘আবেগ’ এই উপন্যাসকে এমন একটি বইয়ে পরিণত করেছে যা ‘এ মুহূর্তে বিশ্বের পাঠকের পড়া জরুরি’।
হিন্দি ভাষায় ‘রেত সামাধি’ প্রকাশিত হয় ২০১৮ সালে। গীতাঞ্জলি জানিয়েছেন, তার উপন্যাসে যে মানবিক গল্প বলা হয়েছে, সংস্কৃতিভেদে তার একটি সার্বজনীন আবেদন রয়েছে।
এর আগেও সলমান রুশদি থেকে শুরু অরুন্ধতী রায়, অরবিন্দ আদিগা, কিরণ দেশাই সহ একাধিক ভারতীয় বুকার পেয়েছেন। তবে গীতাঞ্জলির ক্ষেত্রে এই পুরস্কার প্রাপ্তির বৈশিষ্ট হল, এই প্রথম কোনও ভারতীয় সাহিত্যিক ইংরেজির বদলে অন্য ভাষায় লিখে পুরস্কার পেলেন।