মোল্লা জসিমউদ্দিন: কালিঘাটের কাকু খ্যাত সুজয় ভদ্রের আইনী ধাক্কা অব্যাহত কলকাতা হাইকোর্টে। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা খেলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহা যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তার উপর হস্তক্ষেপ করল না বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ‘সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা নিয়ে পরবর্তী প্রক্রিয়া কী হবে? সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ’।
বুধবার কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডির আইনজীবী আদালতে প্রশ্ন করেন, ‘বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশে কী ভুল রয়েছে? তিনি তো নির্দেশে লিখেছেন যে, কণ্ঠস্বরের নমুনা বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশ ছাড়া বিচারপ্রক্রিয়ায় প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না।’ বিচারপতি সৌমেন সেন আরও বলেন, ”আইন মোতাবেক প্রত্যেক অভিযুক্তেরই কিছু অধিকার থাকে। আইন অনুযায়ী তিনি এই নমুনা দিতে অস্বীকার করতে পারেন’। সেই কন্ঠস্বর নিয়ে মামলা করেও রেহাই পেলেন না নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ। বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেল ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ‘কালীঘাটের কাকু।’ কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশই বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। অর্থাত্ কন্ঠস্বর পরীক্ষায় কোনও বাধা নেই। তবে ট্রায়ালে সেই কন্ঠস্বর প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে কি না? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ।
কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ‘ট্রায়ালে এই স্বর প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হবে কি না, সেটা বিচার করবেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ’। কন্ঠস্বর সংগ্রহের ক্ষেত্রে কোনও বাধা না থাকলেও এদিনের শুনানিতে বিচারপতি সৌমেন সেন ট্রায়ালে ওই কন্ঠস্বর ব্যবহার নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন। ইডিকে ওই নমুনা ব্যবহারের অনুমতি আগে নিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইডি-র তরফে আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী জানিয়েছেন, “আদালতের নির্দেশে কোথাও নমুনা সংগ্রহ না করার কথা বলা হয়নি। এসএসকেএম গত জুলাই মাস থেকে ওই নমুনা সংগ্রহ করতে দেয়নি। গোটা রাজ্য প্রশাসন ইডির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। আমরা জানতে চাই এটা ব্যবহারে সমস্যা কোথায়? এভাবে মামলার ফাঁসে আমাদের তদন্তে দেরি হচ্ছে।”
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ‘আদালতের নির্দেশ মতো, ইডিকে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের ঘরে গিয়ে অনুমতি নিতে হবে’। গত সপ্তাহে রুদ্ধদ্বার শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা কন্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপরই ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে সুজয়কৃষ্ণের কন্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।এরপর সুজয় বাবু কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দারস্থ হন। তবে এদিন তিনি ধাক্কা খেলেন ডিভিশন বেঞ্চে।