পুবের কলম প্রতিবেদক : কলকাতা শহরের বিভিন্ন প্রান্তেই সাইবার প্রতারণার মাধ্যমে দিন দিন বাড়ছে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনা।কিছু অসাধু প্রতারক প্রযুক্তির অপব্যবহার করে সাধারণ গ্রাহকের ব্যাঙ্কের আমানত থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এদের খপ্পরে পড়ে অনেকেই সর্বসান্ত হচ্ছেন। প্রতারিত গ্রাহকদের কাছ থেকে এমন ভুরি ভুরি অভিযোগ পেয়ে রীতিমত উদ্বিগ্ন যেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।ব্যাঙ্ক জালিয়াতি চক্রের অপরাধের শেকড় খুঁজতে গিয়ে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে সাইবার বিশেষজ্ঞ সহ পুলিশ কর্তাদের।
ব্যাঙ্ক গ্ৰাহকের জমানো টাকা ব্যাঙ্কে সুরক্ষিত রাখার জন্য শহরবাসীর জন্য একগুচ্ছ পরামর্শ দিতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে কলকাতা পুলিশ।কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার পক্ষ থেকে ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের টাকা সুরক্ষিত রাখার জন্য ‘ওটিপি-ই রক্ষাকবচ’ নামে একটি প্রচার পুস্তিকাও বার করা হয়েছে। এই প্রচার পুস্তিকা সাধারণ নাগরিকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে।কলকাতা পুলিশের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার উদ্যোগে প্রচারিত পুস্তিকার মাধ্যমে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ব্যাঙ্ক, বীমা বা অন্যান্য আর্থিক সংস্থা কখনই আমানতকারীদের কাছ থেকে ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত তথ্য জানতে চায় না। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড, ওটিপি, ইউপিআই পিন, এটিএম পিনের মত গোপনীয় এবং একান্ত ব্যক্তিগত তথ্যগুলির ক্ষেত্রে সতর্ক করা হয়েছে গ্রাহকদের। ব্যাঙ্ক একাউন্ট সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্যগুলি যেন কোনভাবেই অচেনা কোন ব্যক্তির সঙ্গে আদান-প্রদান না করা হয়, সে বিষয়েও সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সাইবার প্রযুক্তিকে ঢাল করেই ব্যাঞকজালিয়াতদের মূল লক্ষ্যই থাকে গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য হাতিয়ে নেওয়া। জালিয়াতরা নানাভাবেই গ্রাহককে প্ররোচিত করার চেষ্টা চালিয়ে থাকে। এই ধরণের প্ররচণার হাত থেকে ব্যাঙ্ক গ্রাহককে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই পুস্তিকায়।
ব্যাঙ্ক প্রতারকরা গ্রাহককে ফোন করে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর, ডেবিট কার্ডের তথ্য সহ অন্যান্য তথ্য চাইতে পারে। আবার অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্ক কেওয়াইসি আপডেট করে দেওয়ার নাম করেই প্রতারকরা ব্যাঙ্ক গ্রাহকের বিভিন্ন তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে। এমনকী ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক গণমাধ্যমেও বিভিন্ন ধরনের আকর্ষনীয় বিজ্ঞাপনের লোভ দেখিয়ে গ্রাহককে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে।এই ধরনের লোভনীয় বিষয় থেকে গ্রাহকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন গোয়েন্দারা।
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার তরফে জানানো হয়েছে, ভালোভাবে যাচাই না করে কোনো কাস্টোমার কেয়ার ফোন নম্বরে ফোন করে ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত তথ্য না দেওয়াই উচিত। কারণ এমনও হতে পারে, ওই যোগাযোগের নম্বরটি হতে পারে ভুয়ো। ‘ওটিপি-ই রক্ষাকবচ’ পুস্তিকার মাধ্যমে সুরক্ষিত এবং সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছে কলকাতা পুলিশের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার পক্ষ থেকে।