পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: এনসিইআরটি সিলেবাস থেকে ছেঁটে ফেলেছে মুঘল শাসনামল, ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গা, মৌলানা আবুল কালাম আজাদকে। এ নিয়ে সারা দেশে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আরএসএস ও বিজেপি দেশের ইতিহাস বদলে ফেলে গেরুয়াকরণ করতে চায়, এমন অভিযোগ রয়েছে বহু আগে থেকেই। গত ৯ বছরে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ চলছে পুরোদমে। বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনার তলায় মন্দির ছিল কি না, তা খুঁজে বের করার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ যেমন চলছে, তেমনই ইতিহাস থেকে মুসলিম শাসনমালের নামগন্ধ মুছে ফেলার নীলনকশা বাস্তব রূপ পাচ্ছে।
এনসিইআরটির পাঠক্রম থেকে মুঘলদের বাদ দেওয়াকে তারই অংশ হিসেবে ধরা হচ্ছে। এ দেশের স্থাপত্য, চিত্রকলাসহ সাংস্কৃতিক বিভিন্ন অঙ্গনে যেমন এই শাসনকর্তাদের অবদান রয়েছে, তেমনই অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করতেও মুঘল শাসকরা বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। আধুনিক গবেষণায় উঠে আসছে সেসব কথা। সম্প্রীতির ভারত অক্ষুণ্ণ ঠিক সেই আবহে এমন সিদ্ধান্ত তাই পড়ুয়াদের ক্ষতি বই উপকার করবে না।
ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে কেরল স্টেট কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা এনসিইআরটির বাদ দেওয়া বিষয়গুলিও পড়াবে তাদের রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের। ইতিহাসের কোনও বিষয় থেকে বঞ্চিত করতে চায় না তারা। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির টেক্সটবুক থেকে যে অংশগুলি বাদ গেছে তা কেরলের পাঠক্রম থেকে বাদ যাবে না। এর জন্য তারা পরিপূরক টেক্সটবুক ছাপাতেও রাজি আছে। এসসিইআরটি ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছে। তারা এবার কেরলের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করে সিদ্ধান্তটি সরকারিভাবে ঘোষণা করবে।
কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকার বরাবরই শিক্ষায় গেরুয়াকরণের বিরোধিতা করে এসেছে। এবার এই নতুন সিদ্ধান্ত তাদের সেই অবস্থানকে আরও দৃঢ় করল। অন্যান্য অবিজেপি রাজ্যগুলিও সেই পথে হাঁটে কি না সেটাই দেখার। ইতিমধ্যেই তিরুবনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন।