পুবের কলম প্রতিবেদক : কর্নাটকে স্কুলজীবনের শেষ পরীক্ষা এসএসএলসি (সেকেন্ডারি স্কুল লিভিং সার্টিফিকেট এগজামিনেশন) শুরু হচ্ছে আগামী ২৮ মার্চ, সোমবার। এবার এই পরীক্ষা দিচ্ছেন ৮.৭৩ লক্ষ ছাত্রছাত্রী। কর্নাটকজুড়ে মোট ৩৪৪৪ কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষা চলবে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত। কর্নাটক সরকার জানিয়ে দিয়েছে, মেয়ে পরীক্ষার্থীদের হিজাব পরে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। পরীক্ষাকেন্দ্রে মাস্ক পরাও বাধ্যতামূলক নয়। হিজাব বিতর্কে কর্নাটক হাইকোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের প্রেক্ষিতে কর্নাটক সেকেন্ডারি এডুকেশন এগজামিনেশন বোর্ড (কেএসইইবি) সমস্ত পরীক্ষার্থীকে নির্দেশ দিয়েছে তারা যেন আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পরীক্ষাকেন্দ্রে ইউনিফর্মে আসে।
কর্নাটকের শিক্ষামন্ত্রী বি সি নাগেশ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা যেন কোর্টের নির্দেশ মেনে ইউনিফর্ম পরে পরীক্ষা দিতে আসেন। তিনি বলেন, দেশে যেহেতু করোনার প্রকোপ কমে গেছে তাই পরীক্ষাকেন্দ্রে মাস্ক পরাকে বাধ্যতামূলক করা হয়নি। আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষগুলিকে বলেছি পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিকে ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করতে। এবার পরীক্ষায় বসতে চলেছেন রাজ্যের ১৪,৩৮৭ স্কুল থেকে মোট ৮,৭৩,৮৬৮ জন ছাত্রছাত্রী। এদের মধ্যে রেগুলার ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা হল ৮,২০,৮৮৮ জন। বাকি ৪৬,২০০ জন পরীক্ষার্থী হলেন প্রাইভেট যারা কোনও স্কুলের সঙ্গে জড়িত নন। কেএসইইবি-র তথ্য অনুযায়ী, চারজন ট্রান্সজেন্ডার পরীক্ষার্থীও পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মোট ৪,৫২,৭৩২ জন হলেন ছাত্র এবং ৪,২১,১১০ জন হলেন ছাত্রী।
কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও অধুনা বিরোধী দলের নেতা সিদ্দারামাইয়া ফের একবার হিজাব বিতর্কে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, জৈন সম্প্রদায়ের মহিলা, হিন্দু মহিলাদের এক বড় অংশ, এমনকী সন্ন্যাসিনীদের এক বর্গ শাড়ি কিংবা অন্য কাপড় দিয়ে তাদের মাথা ঢেকে রাখেন। তাহলে ক্লাসে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরায় সমস্যা কেন। কর্নাটকে এই বিতর্ক সুপরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি করেছে বিজেপি। তিনি বলেন, অসুস্থ ব্যক্তিকে সার্জারি কিংবা অন্য কোনও এমারজেন্সিতে রক্ত দেওয়ার সময় কেউ প্রশ্ন করে না রক্তটা হিন্দুর, মুসলিমের নাকি শিখের। তখন আমরা নিজের ধর্মের কোনও ব্যক্তির রক্ত খুঁজি না। কর্নাটকে বিজেপি মুসলিম ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করতে দিচ্ছে না, এ কাজ অমানবিক। মুসলিম মেয়েরা শুধু হিজাব দিয়ে মাথা ঢাকতে চেয়েছিল, এতেও আপত্তি বিজেপির? সারা দেশে এই নিয়ে বিরাট বিতর্কের সৃষ্টি হল, যেন এটা কত বড় সমস্যা। মানুষের দৈনন্দিন বেঁচে থাকার সমস্যাগুলি নিয়ে বিজেপি সবসময় মুখ বন্ধ করে থাকে। এটাই এখন বিজেপির রাজনৈতিক কৌশল বলে মন্তব্য করেন সিদ্দারামাইয়া।