পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে কংগ্রেসের নাম না করে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি ও পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করা সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন। আর সেই দিনেই বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে “মেগা” ফ্রিডম র্যা লির মধ্যে দিয়ে কর্নাটকের কংগ্রেস ইউনিট স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন করল। এই র্যা লিতে প্রায় এক লক্ষের বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করে।
সোমবার দুপুর ২টায় সাঙ্গোলি রায়না সার্কেল থেকে ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ পদযাত্রা শুরু হয়। প্রায় ৪ ঘন্টার পদযাত্রা ন্যাশনাল কলেজ গ্রাউন্ডে শেষ হয়। সেখানে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
রাজনৈতিক মহলের মতে, কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির (কেপিসিসি) সভাপতি ডি.কে. শিবকুমার এবং বিরোধী নেতা সিদ্দারামাইয়া আবারও জনসমক্ষে একটি ঐক্যবদ্ধ শো করেন। কংগ্রেসের তরফ থেকে মেগা র্যা লি স্বাধীনতা দিবসে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
শিবকুমার বলেন, কংগ্রেস পার্টি বহুত্ববাদী, ধর্মনিরপেক্ষ এবং সার্বভৌম ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিল। আমাদের তেরঙ্গা, জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার সময় আমরা গর্বিত বোধ করি৷ কংগ্রেস দলের নেতারা এবং আমাদের পূর্বপুরুষ দাদাভাই নরোজি, মহাত্মা গান্ধি, জওহরলাল নেহেরু, সরোজিনী নাইডু, বাল গঙ্গাধর তিলক, সুভাষ চন্দ্র বসু ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিল। বিজেপির নাম না করে শিবকুমার বলেন, আজ যে ধর্মের নামে যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে, স্বাধীনতা সংগ্রামীরা কখনই তাকে প্রশ্রয় দিতেন না।
বিজেপি সরকার সব সময় নেহরু পরিবারকে আক্রমণ করে এসেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বিজেপির অংশগ্রহণ করার কোনও ইতিহাস নেই। নেহরু, গান্ধি, পরিবার স্বাধীনতা সংগ্রামে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। আসলে কংগ্রেসকে হিংসা করে বিজেপি।
শিবকুমার বলেন, আমরা কিত্তুর রানী চেন্নাম্মা এবং সুরাপুর নায়ক ভেঙ্কটপ্পা বাহলার সংগ্রামকে কখনই ভুলিনি। কংগ্রেস পার্টি দেশে সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে এবং সবাই কন্নড় মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে জানেন। তিনি আরও বলেন, বি. আর. আম্বেদকর যিনি নিশ্চিত করেছিলেন যে, ভারতের সংবিধান রচনা করার সময় প্রত্যেক ভারতীয়কে সমানভাবে বিবেচনা করা হবে।
কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেন, দেশবাসীকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা এসেছিল। অবশ্যই আমাদের ইতিহাস, আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের কথা মনে রাখতে হবে যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম একটি স্বাধীন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আমাদের কখনই তাদের ভুলে যাওয়া বা অসম্মান করা উচিত নয়।
সিদ্দারামাইয়া বলেন, যারা এই স্বাধীনতা সংগ্রামী নিয়েও বৈষম্য আনার চেষ্টা করছে, তাদের এই ধরনের কাজ করা অপরাধের শামিল।
ন্যাশনাল কলেজ মাঠে স্বাধীনতা মার্চের সমাপ্তিতে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন জনপ্রিয় গায়ক হরিহরন। কংগ্রেস এই ইভেন্টে অংশ নেওয়ার জন্য ১ লাখেরও বেশি মানুষ অনলাইনে নিজেদের নাম রেজিস্ট্রেশন করেন। এই মেগা ইভেন্টের জন্য রাজ্যে যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয় তার জন্য ৩০ হাজার মেট্রোর টিকিট কেনা হয় কংগ্রেসের তরফে। যা অংশগ্রহণকারীদের বিনামূল্যে দেওয়া হয়।
এই মেগা মিছিলে মহিলা, প্রবীণ নাগরিক থেকে ছোট ছোট বাচ্চা সহ সর্বস্তরের মানুষকে হাঁটতে দেখা যায়।
কর্নাটকের এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক ইনচার্জ রণদীপ সুরজেওয়ালা, প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বরা, কর্নাটক বিধান পরিষদের বিরোধীদলীয় নেতা বি.কে. সহ শীর্ষ কংগ্রেস নেতৃত্ব, হরিপ্রসাদ, কেপিসিসি প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান এম.বি. পাটিল প্রমুখ কংগ্রেসের এই মেগা ইভেন্টে অংশ নেন।