পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মুসকান খানের কথা মনে আছে? গত বছর কর্নাটকে হিজাব নিয়ে আন্দোলনের সময় মুসলিম মেয়েদের মুখ হয়ে উঠেছিলেন এই পড়ুয়া। কানিজ ফাতিমা তেমনই এক মুখ। তবে বয়স মুসকানের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু আদর্শের প্রশ্নে কেউই কুচক্রী শক্তিকে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দিতে প্রস্তুত নন। গুলবর্গা উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী এই কানিজ ফাতিমা। এখন তিনি কংগ্রেসের বিধায়কও বটে। তার স্বামী ছিলেন মন্ত্রী ও কংগ্রেসের ৬ বারের বিধায়ক।
২০১৮-তে স্বামীর ইন্তেকালের পর নেতৃত্বের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে নিয়েছেন বছর ৬৩-র কানিজ ফাতিমা। এখানেই তার লড়াইটা বড্ড কঠিন। একে তো মুসলিম। তার উপর রাজ্যজুড়ে হিজাববিরোধী হাওয়া। কিন্তু তাতে টলছেন না তিনি। হিজাব ছাড়েননি। শালীনতার সঙ্গেই সমানে রাজনীতি করে যাচ্ছেন। রাত দশটা পর্যন্ত প্রচারে ঘুরছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। এবার তার বিরুদ্ধে লড়ছেন বিজেপি প্রার্থী চন্দ্রকান্ত পাতিল। তিনি একজন লিঙ্গায়েত নেতা। পাঁচ বছর আগে তিনি ৬ হাজার ভোটে হেরেছিলেন। এবার এই কেন্দ্রে পাতিল ও ফাতিমা ছাড়াও ৯ মুসলিম প্রার্থী রয়েছে। তাদেরকেও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে হচ্ছে কানিজ ফাতিমাকে। ভোট ভাগ যাতে না হয়, সেদিকে সচেষ্ট হতে হচ্ছে তাকে। কিন্তু মানুষের মধ্যেও তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। হিজাব পরার জন্য অনেকের কাছেই তিনি শ্রদ্ধার পাত্রী। ফলে মানু¡ যে তাকে সমর্থন করবেন, তা অনেকটাই নিশ্চিত।
গুলবর্গার ভোটারদের মধ্যে ৬০ শতাংশই মুসলিম। তাই তার জেতা নিয়ে তেমন সংশয় দেখছেন না অনেকেই। কিন্তু এবার শুধু নিজে জিতলে হবে না। কর্নাটক থেকে তাড়াতে হবে বিভেদকামী শক্তিকে। এ বছর কংগ্রেসের তিনিই একমাত্র মুসলিম মহিলা প্রার্থী। ২২৪ আসনে বিজেপি কোনও মুসলিম প্রার্থী দেয়নি। জেডিএস একজন মুসলিম মহিলা প্রার্থী দিয়েছে।
গত বছর যখন হিজাব নিয়ে আন্দোলন চলছিল, তখন গুলবর্গাতে মিছিল বের করেছিলেন ধর্মপ্রাণ ফাতিমা। সিএএ-বিরোধী আন্দোলনেও তিনি ছিলেন প্রতিবাদী মুখ। হিজাব পরেই লড়াইয়ের ময়দানে তিনি অবিচল থেকেছেন। বিদায়ী বিধায়ক কানিজ ফাতিমার ভাষায়, হিজাব আমাদের অধিকার। স্বাধীন ভারতে আমাদের সেই স্বাধীনতা রয়েছে। আমরা মানুষের পোশাক নিয়ে কোনও প্রশ্ন তুলি না। এই ইস্যু তুলে মেয়েদের স্কুল-কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিতে চাইছে বিজেপি।