পারিজাত মোল্লা: অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে কলকাতা হাইকোর্টে একের পর এক নির্দেশ। গত বৃহস্পতিবার দুটি নির্মাণ ভাঙার জন্য কড়া বক্তব্য রেখেছিলেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার সেই পথেই হাঁটলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। শুক্রবার এই নির্দেশ তিনি দিয়েছেন। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। রীতিমতো ধমক দিয়েছেন বিচারপতি। বেআইনি নির্মাণ কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।অবিলম্বে এই নির্মাণ ভাঙতে হবে। এই কথা জানিয়েছেন বিচারপতি। শুধু তাই নয়, যত ফোর্স লাগে তার ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একবালপুরের ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডে ওই বেআইনি নির্মাণ হয়েছে বলে অভিযোগ। গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, -‘অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে পুলিশকে কঠোর হতে হবে।৬ দিনের মধ্যে ওই নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন’ বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। একবালপুরের ক্ষেত্রেও একই বক্তব্য রেখেছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। ইকবালপুরে ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে হবে। আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে এই নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এজন্য ডিসি বন্দরকে প্রয়োজনীয় বাহিনী দিতে হব। এমন নির্দেশ বিচারপতির। বেআইনি নির্মাণ ভাঙার জন্য গেলে বাধার সম্মুখীন হতে হতে পারে কর্মীরা। সে কথা মাথায় রেখেই পর্যাপ্ত বাহিনী রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
কলকাতার একবালপুরের একটি অবৈধ বহুতল ভাঙার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা । যত ফোর্স প্রয়োজন তত ফোর্স নিয়ে ওই অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ।
একবালপুরের এই অবৈধ নির্মাণ নিয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন এক স্থানীয় বাসিন্দা । বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশ, -‘ ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো বাড়ি ভেঙে ফেলতে হবে । ২৮ ডিসেম্বর আদালতকে রিপোর্ট দিতে হবে ।’ আদালত সুত্রে প্রকাশ, ২০১৭ সালে প্রথম আলিপুর আদালতে মামলা হয় এই বেআইনি নির্মাণটি নিয়ে । আলিপুর আদালত পুর আইনের ১৪৪ ধারায় ওই বহুতলে নতুন করে আর কোনও নির্মাণ করতে বারন করে । পুলিশ রিপোর্ট দিয়ে জানায় ওই বেআইনি নির্মাণের কাজ বন্ধ করা হয়েছে । অভিযোগ, এর মাঝে মামলাকারীকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়। এরপর ২০১৭ সালে নভেম্বরে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারী । মামলা হয় বেআইনি নির্মানের অভিযোগে ।
২০১৮ সালের জুন মাসে বিচারপতি দেবাংশু বসাক ৬ সপ্তাহের মধ্যে কলকাতা পৌরনিগমকে নির্দেশ দেন বাড়ি ভাঙতে। কিন্তু কলকাতা পৌরনিগমের লোকজন সেখানে গেলেও, বাড়িটি আর ভাঙা হয়নি । ২০১৯ সালে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। পৌরনিগম আদালতকে জানায় বাড়ি ভাঙা হবে ।
এর ফলে অবমাননার মামলার প্রয়োজন নেই বলে দাবি জানায়। গত বছর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এজলাসে মামলা দায়ের হয় । উনি আবার ওই বহুতল ভাঙার নির্দেশ দেন । এর বিরুদ্ধে প্রমোটার আপিল করেন হাইকোর্টের উচ্চতর বেঞ্চে । এরপর বিচারপতি অরিজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় ১৫ দিনের মধ্যে বাড়ি খালি করতে । কিন্তু সেই নির্দশও মানা হয়নি বলে অভিযোগ।
পরে মামলা বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে যায় । বিচারপতি সিনহা গত বছর ১০ নভেম্বর নির্দেশ দেন পুরো বাড়ি ফাঁকা করে ভেঙে ফেলতে। কিন্তু এক বছরে ও সেই নির্দেশ পালন করা হয়নি। এদিন শুনানি চলাকালীন মামলাকারী অভিযোগ করেন, আদালতের নির্দেশ কার্যকর না করে, উলটে আরও একটা তলা বাড়ানো হয়েছে ওই বেআইনি বহুতলে । এরপরেই বিচারপতি অবিলম্বে ওই বহুতল ভাঙতে নির্দেশ দেন। পুলিশ কে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ রয়েছে।