পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: যুদ্ধে কোনও আইন নেই, নেই কোনও সংবিধান। ‘এভরিথিং ইজ ফেয়ার ইন ওয়ার’। ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের সূচনালগ্ন থেকে এমনটাই প্রমাণ করে আসছে নেতানিয়াহু’র সেনাবাহিনী। জল-বিদ্যুৎ-ইন্টারনেট বন্ধ করে গাজাকে কার্যত ‘পঙ্গু’ করে দিয়েছে তারা। এবার রুজি-রুটি’র একমাত্র উৎস’তে হামলা চালালো দখলদার ইসরাইল।
জানা গেছে, উত্তর পশ্চিম তীরের শহর নাবলুসের দক্ষিণে কুসরা শহরে জয়তুন বাগান ‘কিটের ন্যায়’ তছনছ করে দেয়। উপড়ে ফেলে একাধিক গাছ। এমনকি জয়তুন সংগ্রহকারীদের উপর অতর্কিত হামলা চালাচ্ছে ইহুদিরা।
ফুয়াদ হাসান নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, পশ্চিম তীরে অবস্থিত ভিন্ন ভিন্ন জয়তুন বাগানে যায়নবাদী ‘শয়তান’ রা হামলা চালাচ্ছে। ফল সংগ্রহ করতে গেলে লাঠিপেটা ও পাথর ছুড়ে আঘাত করছে। অনেকেই গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এই সমস্ত এলাকা ফিলিস্তিনের। তবে সেনাদের কঠোর নজরদারিতে রয়েছে। তারপরেও এই রকম বর্বরোচিত ব্যবহার করছে ইহুদিরা। রেফাফা, সালফিট, হেব্রন, প্রতিটি এলাকায় নিরীহ জয়তুন সংগ্রহকারীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে ওরা। এইভাবে আর কত দিন? আমাদের জমিতে আমাদের প্রাণে মারছে, বা মারার হুমকি দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, পবিত্র কুরআনে বর্ণিত জয়তুন ফিলিস্তিনে অর্থকরী ফসল। যা বিশ্বের বাজারে চড়া দামে বিক্রি হয়। ইসরাইলের রাগ জয়তুন বাগানের উপর। নানা রকমের ক্ষতিকারক স্প্রে প্রয়োগ করে ইতিপূর্বে তারা লক্ষ লক্ষ জয়তুন গাছ বিনষ্ট করে দিয়েছে তারা। আর এমন যুদ্ধের সুযোগ নিয়ে জবরদখলকারীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছে জয়তুন বাগানের উপর। অতীতে অগুনতি জয়তুন গাছ মাটি সমেত উপড়ে স্পেন সহ ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। তা সত্ত্বেও ফিলিস্তিনের জয়তুনের সঙ্গে টেক্কা দিতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। গাজাবাসীদের মতে, আল্লাহর রহমত রয়েছে তাঁদের জয়তুন গাছ, ও বাগানের উপর। আর ইসরাইলের যত রাগ তাতেই।
প্রসঙ্গত, দেখতে দেখতে ২২ দিন অতিক্রান্ত করল গাজা-ইসরাইল যুদ্ধ। অথচ শান্তি-সমঝোতার চিহ্নমাত্র নেই। বরং একের পর এক বিধ্বংসী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইহুদি বাহিনী। হাসপাতাল, গির্জা, শরণার্থী শিবির বাদ যাচ্ছে না কিছুই। ইতিমধ্যেই গাজায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৭৫০০ হাজারের সীমা। তাঁদের মধ্যে হামাস মুক্তিযোদ্ধা কটা বোঝা না গেলেও মৃত শিশুদের সংখ্যা ঠিক গোনা যাচ্ছে। অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে, গাজাকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন না করে বোধহয় থামবে না ইসরাইলের আগ্রাসন, এমনটাই আশঙ্কা করছে পর্যবেক্ষক মহল।