ইসলামাবাদ : পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সোমবার অভিযোগ করেছেন যে, চরমপন্থী সংগঠনগুলি নিশানা করছে ভারতের মুসলিমদের। তিনি এরপর সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আঞ্চলিক শান্তি ক্ষেত্রে এই ধরনের এজেন্ডা প্রকৃতই বিপজ্জনক এখন। ডিসেম্বরে উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে ‘ধর্ম সংসদে’ মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে আপত্তিকর উস্কানিমূলক ও বিস্ফোরক ভাষণ দেওয়া হয় তার কথা উল্লেখ করেন ইমরান। নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডেলে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ভারতের বিজেপি সরকার কি সংখ্যালঘুদের বিশেষত ২০০ মিলিয়ন মুসলিমদের গণহত্যার আহ্বানকে সমর্থন করে? এছাড়াও তিনি বলেন, এই বিষয়ে নজর দেওয়া ও পদক্ষেপ নেওয়া দরকার আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলির। আরও একটি ট্যুইটে ইমরান অভিযোগ তোলেন, বিজেপি-নেতৃত্বাধীন সরকার ভারতের সংখ্যালঘুদের নিশানা করছে লাগাতার। গত মাসে পাকিস্তানের বিদেশ দফতর ভারতের বিদেশ দফতরের কর্তাদের তলব করেছিল এবং হরিদ্বারের ঘৃণা-ভাষণ নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানায় তারা। ইসলামাবাদ দিল্লিকে জানায় যে, ওই ঘৃণা ও বিদ্বেষ ভাষণকে কঠোরভাবে দেখছে সুশীল সমাজ ও দেশের একাংশ মানুষ। প্রসঙ্গত, ১৭-২০ ডিসেম্বরে হরিদ্বারে ধর্ম সংসদ আয়োজন করে জুনা আখড়ার যতী নরসিংহানন্দ। মুসলিমদের বিরুদ্ধে হিংসা উস্কে দেওয়া ও ঘৃণামূলক ভাষণ দেওয়ার জন্য তিনি এখন পুলিশের নজরদারিতে। এই অনুষ্ঠানে একাধিক বক্তা প্ররোচনামূলক ও বিস্ফোরক ভাষণ দেন বলে অভিযোগ। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষ করে মুসলিমদের গণহত্যার ডাক দেন তাঁরা। এই ঘটনায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানের আয়োজক গাজিয়াবাদের দশনা মন্দিরের প্রধান পুরোহিত যতী নরসিংহানন্দ ও জিতেন্দ্র নারায়ণ ত্যাগীর বিরুদ্ধে এফআইআর জমা পড়েছে। জিতেন্দ্রর আগে নাম ছিল ওয়াসিম রিজভি। তিনি নাম ও ধর্ম পরিবর্তন করে জিতেন্দ্র নারায়ণ হয়েছেন। যাইহোক, পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। এই বিষয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা শুনতে সোমবার রাজি হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যারা ঘৃণামূলক ভাষণ দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেছে সর্বোচ্চ আদালত। প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিবাল শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছেন যে, এফআইআর হওয়া সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত ঘৃণা প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সিবালের দায়ের করা অভিযোগে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে।