পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: হামাস যোদ্ধাদের লড়াইকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে মন্তব্য করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ শুরু হতে না হতেই প্রকাশ্যে দখলদার ইসরাইলকে সমর্থন করেছিলেন তিনি। ট্যুইটারে প্রধানমন্ত্রী লিখেছিলেন, তিনি ইসরাইলের পাশে রয়েছেন। এই কঠিন সময়ে ইসরাইলে নিহতদের পরিবারের জন্যতাঁর প্রার্থনা করছেন। এর বেশকিছু দিন পরে ফের ট্যুইট করেন মোদি। সেখানেও তিনি ইসরাইলের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে লেখেন, ভারত সব ধরনের সন্ত্রাসবাদকে নিন্দা করেন। ভারতের জনতা সমপূর্ণভাবে ইসরাইলের পাশে রযেছে। যদিও ভারতের বিদেশ মন্ত্রককে হামাস ইস্যুতে কিছুটা সুর নরম করতে দেখা যায়। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের অভিমত ছিল—স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিকে তারা সমর্থন করে। এই পরিস্থিতিতে এবার রাষ্ট্রসংঘে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের জবর দখল করে বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে আনা নিন্দা প্রস্তাবে ভারত সরাসরি ইসরাইলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। যা বর্তমান পরিস্থিতিতে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
গায়ের জোরে ফিলিস্তিনের একটা বড় অংশ দখল করে সেখানে বসতি স্থাপন করে ইসরাইল। ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে ঘাঁটি গেড়ে বসে যাওয়া ‘উদ্বাস্তু’ ইসরাইল তারপর নাগাড়ে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের উপর অমানবিক হামলা চালিয়ে গিয়েছে। আল্-আকসার দখল নেওয়াও তাদের অন্যতম উদ্দেশ্য। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনিরা নিজেদের জমি ও আল্ আকসার উপর অধিকার ছাড়তে নারাজ। এই নিয়ে লড়াই চলছে। হামাসের লড়াইয়ের পালটা ইসরাইল যে বর্বরচিত আগ্রাসন শুরু করেছে তা নিয়ে বিশ্বের বহু দেশে প্রতিবাদ হয়েছে। শনিবারও রিয়াধে মুসলিম শাসকরা জরুরি বৈঠক করেন। সেখানেও ইসরাইলি বর্বরতার তীব্র নিন্দা জানান তাঁরা। আর তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেইফিলিস্তিনে জোর করে ইসরাইলের বসতি স্থাপনের নিন্দা জানিয়ে রবিবার রাষ্ট্রসংঘ প্রস্তাব আনে। আর সেই প্রস্তাবের সমর্থনে ভোট দেয় ভারত সহ অন্যান্য রাষ্ট্র। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভোটে প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়।
অন্যদিকে, প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে আমেরিকা, কানাডা সহ মোট সাতটি দেশ। আর ভোটদানে বিরত থেকেছে ১৮টি দেশ। প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে চলতি সংঘাতে যুদ্ধবিরতি চেয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে জর্ডনের আনা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটিতে গরহাজির থেকেছিল ভারত।
এবার অবশ্য ভারত সরাসরি ইসরাইলের বিরুদ্ধে ভোট দিল। যা নিয়ে অনেকেই বলছেন, এই পদক্ষেপ করে ভারত আসলে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধে ‘ভারসাম্যের নীতি’ বজায় রাখল। এদিন, রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাবে দখল করা ফিলিস্তিনের পূর্ব জেরুসালেম ও গোলান হাইটস-এ ইসরাইলের জোরপূর্বক বসতি স্থাপনের নিন্দা করা হয়।