পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া কৃষি আইনের লাগাতার প্রতিবাদ করতে গিয়ে গত এক বছরে বহু কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত কৃষকদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার দাবি উঠেছে বহুবার।বুধবার কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, কৃষক আন্দোলনে যে একজন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে এমন কোনও তথ্য নেই তাঁদের কাছে। বুধবার সংসদকে লিখিতভাবে একথা জানালেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র তোমার ।আন্দোলনরত কৃষকদের মৃত্যুর কথা কার্যত অস্বীকার করল মোদি সরকার।এর আগে অবশ্য পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যু নিয়ে এমনই উদাসীনতা দেখিয়েছিল কেন্দ্র। সেবার বলা হয়েছিল তাদের কাছে নাকি পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর কোনও তথ্য নেই।
সংসদে কৃষক মৃত্যু নিয়ে কেন্দ্রের কাছে ঠিক কী তথ্য রয়েছে ? মৃত কৃষকদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে কিনা, মূলত সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেস-তৃণমূল-সহ অন্য বিরোধী দলের সাংসদেরা। তারই উত্তরে এদিন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী জানান, “আন্দোলনরত কৃষকদের মৃত্যু হয়েছে, এমন তথ্য নেই কৃষিমন্ত্রকের কাছে। ফলে কোনওরকম অনুদানেরও প্রশ্নও ওঠে না।”
তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে সাতশো’রও বেশি কৃষকদের মৃত্যুর দাবি করে এসেছেন কৃষক সংগঠনের নেতা রাকেশ টিকায়েতরা। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে টানা আন্দোলন করে গিয়েছেন তাঁরা। গুরু নানকের জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী কৃষি আইন বিল প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন। গত ২৯ নভেম্বর সংসদের দুই কক্ষেই ‘কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল ২০২১’ পাস হয়ে যায়। যদিও কৃষকেরা তাঁদের আন্দোলন এখনও প্রত্যাহার করে নেননি।
সংযুক্ত কিসান মোর্চা বারবার সরকারকে আলোচনার টেবিলে বসতে বলেছে। বিরোধীরাও লিখিত ভাবে জানাতে চেয়েছেন, কৃষি বিল নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কত বার আলোচনায় বসতে চেয়েছে কেন্দ্র। এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘ আন্দোলন তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে কেন্দ্র ধারাবাহিক ভাবে কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছে।’’
বিরোধীদের প্রশ্নের মধ্যে ছিল ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে(এমএসপি)-র প্রসঙ্গটিও। এ নিয়ে কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, কমিশন ফর এগ্রিকালচারাল কস্ট অ্যান্ড প্রাইস (সিএসিপি)-এর সুপারিশ অনুযায়ী রবি এবং খরিফ মরসুমে ২২টি অর্থকরী ফসলের ন্যূনযতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। সেই মতো কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের সংস্থা কৃষকদের থেকে ফসল সংগ্রহ করে থাকে। এর ফলে অনুমোদিত ফসলগুলির বিক্রয়মূল্য বাড়ে।
“কেন্দ্র কীভাবে বলতে পারে যে তাদের কাছে এটির কোনও রেকর্ড নেই?” এমনই প্রশ্ন করেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা খাড়গে।তিনি বলেন “যদি সরকারের কাছে ৭০০ জনের রেকর্ড না থাকে, তাহলে মহামারীর সময় তারা কীভাবে লাখ লাখ মানুষের তথ্য সংগ্রহ করেছিল। গত দুই বছরে কোভিড-১৯-এর কারণে ৫০ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে কিন্তু সরকারের মতে, ভাইরাসের কারণে মাত্র চার লাখ মানুষ মারা গেছে।”