সুবিদ আবদুল্লাহ্: গম নয়– যব নয়– ভুট্টাও নয়। যাকে পিষিয়ে আটা তৈরি হবে। সেই আটা থেকে তৈরি হবে বিভিন্ন খাবার। এ হল কলাই শস্যের আটা। যে আটার সঙ্গে সামান্য চালের গুঁড়ো মিশিয়ে তৈরি হয় সুস্বাদু রুটি। মালদা শহরে শীতকালীন খাবার হিসেবে বিকোচ্ছে কলাই আটার রুটি। ইডলি– ধোসা বা মোমো– মটকার মত বিকোচ্ছে কলাই আটার রুটি। শীতকালীন সকালের ‘ব্রেকফাস্ট’ হিসেবে পর্যটকদের প্রিয় হয়ে উঠেছে এই খাবার।এই রুটি কয়েকশ বছর ধরে মালদার শেরশাবাদী সমাজে ‘লাহারী’ নামে পরিচিত। শেরশাবাদী ভাষা লাহারী। অর্থ সকালের খাবার।
শেরশাবাদী সমাজে যুগ যুগ ধরে শীতকালের প্রিয় খাবার হিসেবে লাহারী খাওয়ার চল রয়েছে। যা এখন সর্বসাধারনের পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে। আমরা যেভাবে দক্ষিণ ভারতের খাবার ইডলি– ধোসায় অভ্যস্ত হয়েছি– সেভাবে এ রাজ্যের মালদা জেলার শেরশাবাদী সমাজের লাহারীও সর্বসাধারনের রসনা তৃপ্তির সহায়ক হবে বলে মনে করছেন খাদ্যরসিক মানুষজন।ধনে পাতার চাটনি ও বেগুন ভর্তার সঙ্গে লাহারী খাচ্ছেন মালদায় আসা পর্যটকগণ। সিকি ইঞ্চি মোটা প্রতিটি রুটির দাম ১৫ বা ২০ টাকা। দুটো লাহারী খেয়ে সারাদিন শুধু জল খান। দুপুরে আর লাঞ্চ করতে হবে না।
দেখলে মনে হবে বিহার-ঝাড়খণ্ডের খাবার লিট্টি। কিন্তু এ রুটি তা নয়। লিট্টির মত এ রুটিতে তেল-মশলার মিশ্রণ নেই। চাপাতির মত এ রুটি হাতের তালুর চাপে গড়ে ওঠে। তারপর মাটির তাওয়া বা কড়াইয়ে সেকা হয়। শীতকালে শেরশাবাদী সমাজের ঘরে ঘরে এই রুটি খেতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে শেরশাবাদী সমাজ গবেষক অধ্যাপক ড. আবদুল ওহাব জানাচ্ছেন– লাহারীকে বৃহত্তর বাজারে আনা যায় কী না সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। চলছে চেষ্টাও– বিশেষ করে কলকাতার বাজারে নিয়ে আসার ব্যাপারে। গবেষক মুহাম্মদ ইব্রাহিমও চান কলকাতায় ইডলি– ধোসা– মোমো– লিট্টির পাশাপাশি বিক্রি হোক লাহারীও। খাদ্য রসিক বাঙালি ভিন রাজ্যের খাবারের সঙ্গে বাংলার নিজস্ব খাবার লাহারীও চেখে দেখুক।