পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ গুজরাত দাঙ্গায় খুন এবং গণধর্ষণের ১১ জন অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি মকুব করে জেল থেকে গত ১৫ আগস্ট মুক্তি দিয়েছিল গুজরাত সরকার। পীড়িতা বিলকিস বানু এই অপরাধীদের মুক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সুপ্রিম কোর্টে। বুধবার সুপ্রিম কোর্টকেই মামলার শীঘ্রই শুনানির জন্য নতুন বেঞ্চ অবিলম্বে গঠন করতে অস্বীকার করেছে।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিমহা’র বেঞ্চকে বিলকিসের আইনজীবী শোভা গুপ্তা আবেদন করেছিলেন বিলকিসের মামলা শুনানির জন্য নতুন বেঞ্চ শীঘ্রই গঠন করা হোক। যাতে মামলাটির শুনানি শিঘ্রই শুরু হতে পারে।
এতে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় আইনজীবীকে বলেন মামলাটি তালিকাভুক্ত করা আছে।
একই জিনিস বারবার বলবেন না কারণ এটা বড় বিরক্তিকর। মঙ্গলবার বিলকিসের মামলার শুনানি ছিল যে বেঞ্চে তার একজন বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী বিলকিসের মামলার শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন।
বিচারপতি ত্রিবেদী এই বিষয়ে কোনও কারণ উল্লেখ করেননি। তাই বুধবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চকে নতুন বেঞ্চ গঠনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন বিলকিসের আইনজীবী। এতেই বিরক্তি প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে গুজরাতের গোধরায় ট্রেনে আগুন লাগানোর ঘটনার পর মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা শুরু হয় রাজ্যে। তখন ২১ বছর বয়স্ক গর্ভবতী বিলকিস বানুকে গণধর্ষণ করে এই ১১ জন দুষ্কৃতী। তারপর বিলকিসের ৩ বছরের শিশু কন্যা সহ তার পরিবারের ৭ জনকে হত্যা করে এই অপরাধীরা। এই ঘটনার তদন্ত তুলে দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে। এই মামলার ট্রায়াল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গুজরাত থেকে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয় বম্বে হাইকোর্টে।
মুম্বাইয়ের সিবিআই আদালত ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি এই ১১ জন অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। পরে সিবিআই আদালতের এই রায় বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট এবং বম্বে হাইকোর্ট। ১১ জন অপরাধী ১৫ বছর জেলে থাকার পর সুপ্রিম কোর্টের কাছে তাদের মুক্তির আবেদন জানায়।
সুপ্রিম কোর্ট গুজরাত সরকারকে নির্দেশ দেয় আবেদনটি বিবেচনা করতে গুজরাত সরকার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অনুমতি সাপেক্ষে এই ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেয়। অথচ গুজরাত হাইকোর্ট এর আগে বলেছিল যেখানে ১১ জন অপরাধীদের বিচার হয়েছে অর্থাৎ মুম্বাইয়ে তাই মহারাষ্ট্র সরকারই এদের মুক্তির আবেদন বিবেচনা করতে পারে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বলে যেখানে অপরাধের ঘটনা ঘটেছে সেই রাজ্যই এই ১১ জনের মুক্তির আবেদন বিবেচনা করতে পারে। বিলকিস বানু সুপ্রিম কোর্টে দুটি মামলা করেছেন। এক সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়ের পুর্নবিবেচনার আর্জি জানানো হয়েছে যাতে গুজরাত সরকারকেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় মামলাটি হল এই ১১ জনের মুক্তির বিরুদ্ধে।