পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজ্যে গড়ে তোলা হবে আরও আড়াই হাজারেরও বেশি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী দুই বছরের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের এই সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিকে কার্যকর করা হবে। এর ফলে একদিকে এ রাজ্যের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্র যেমন আরও উন্নত হবে, তেমনই অন্যদিকে আরও অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ উপকৃত হবেন সরকারি চিকিৎসা পরিষেবায়। তবে, শুধুমাত্র এমনও নয়। ওই সব সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু হয়ে গেলে সংক্রামক রোগগুলির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগের প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায়ও এ রাজ্য আরও অনেক বেশি সফল হতে পারবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতরের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আধিকারিক।
প্রাইমারি লেভেল, সেকেন্ডারি লেভেল এবং টার্শিয়ারি লেভেল। রাজ্যের এই ত্রিস্তরীয় সরকারি স্বাস্থ্যপরিষেবা ক্ষেত্রে মানোন্নয়নের পাশাপাশি উৎকর্ষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১১-য় মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার পর থেকে একের পর এক পদক্ষেপ করে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাধারণ মানুষের কাছে যাতে সহজে পৌঁছনো সম্ভব হয়, সেই লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদক্ষেপও গ্রহণ করে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিকে, বিশেষজ্ঞরা এমনও বলে থাকেন, গ্রামাঞ্চল হোক কিংবা শহরাঞ্চলের প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্য পরিষেবা, উভয় ক্ষেত্রই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্য পরিষেবার মান যথাযথভাবে যত বেশি উন্নত হবে, বাড়ির কাছাকাছি তত বেশি চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন সাধারণ মানুষ। এর ফলে, দূর দূরান্ত থেকে বহু রোগীকে আর টার্শিয়ারি লেভেল অর্থাৎ, মেডিক্যাল কলেজ তথা, চিকিৎসা-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্তরের বিভিন্ন হাসপাতালে যেতে হবে না। এই ধরনের অবস্থায় আরও আড়াই হাজারেরও বেশি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে উঠছে এ রাজ্যে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে বিশেষ করে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন সহ অন্য বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের পাশাপাশি চোখ, ইএনটি (কান-নাক-গলা)-র পরিষেবা, ওরাল হেলথকেয়ার, বয়স্ক এবং মানসিক রোগীদের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে গ্রামাঞ্চলের পাশাপাশি শহরাঞ্চলেও গড়ে তোলা হচ্ছে একের পর এক সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে আরও উন্নতির লক্ষ্যে চলতি বছর অর্থাৎ, ২০২৪-এর মার্চ মাসের মধ্যে মোট ১৪,০৭২টি এবং ২০২৫-২৬-এর মধ্যে ১৬,৬১৬টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র কার্যকরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে, আগামী দুই বছরের মধ্যে আরও ২,৫৪৪টি অর্থাৎ, আড়াই হাজারেরও বেশি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু হতে চলেছে এ রাজ্যে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, আরও অনেক সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু হয়ে গেলে সংক্রামক রোগগুলির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগের নির্ণয় এবং চিকিৎসার বিষয়টি শুধুমাত্র নয়, বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও আরও বেশি সফল হতে পারবে এ রাজ্য। ওই স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘আগে সংক্রামক বিভিন্ন রোগের কারণে অনেক বেশি মানুষের মৃত্যু হতো। এখন অসংক্রামক বিভিন্ন রোগের কারণে অনেক বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।’ তিনি জানান, অসংক্রামক রোগগুলির মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার। এর পাশাপাশি মানসিক সমস্যাও এখন বেড়ে চলেছে। এ সব ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার বিষয়ে আরও অনেক বেশি সুফল মিলবে এই সব সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু হলে।