পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: বিশ্বে ৬০টির বেশি দেশে সমকামিতাকে আইনত অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এবার ইরাকের পার্লামেন্টে পাস হওয়া নতুন একটি আইনে সমলিঙ্গের মানুষের মধ্যকার যৌন সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবে করা হয়েছে। এমন সম্পর্কে জড়ালে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এ আইনে।
ইরাকের সমাজে ধর্মীয় মূল্যবোধ অক্ষুণ্ণ রাখতে নতুন এ আইন করা হয়েছে। যদিও জনাকয়েক অধিকারকর্মী এর বিরোধিতা করেছেন। তাদের মতে, ইরাকে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের সর্বশেষ নজির এটি। যদিও এর মাধ্যমে কাউকে আক্রমণ করা হয়নি বলে জানিয়েছে ইরাকি কর্তৃপক্ষ।
আইনে বলা হয়েছে, নৈতিক অবক্ষয় ও বিশ্বগ্রাসী সমকামিতার আহ্বানের হাত থেকে ইরাকি সমাজকে রক্ষা করা এ আইন পাসের উদ্দেশ্য। ইরাকের পার্লামেন্টে বৃহত্তম জোটের অংশ হিসেবে রক্ষণশীল শিয়া মুসলিম দলগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় নতুন এই আইন পাস করা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বের একটি অংশ বাণিজ্যিকভাবে সমকামিতাকে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের প্রয়াসের বিরুদ্ধে ইরাকের এই পদক্ষেপ এক জোরালো থাপ্পড়।
নয়া আইনে বলা হয়েছে, যৌনবৃত্তি ও সমলিঙ্গের সম্পর্ক অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এমন কর্মকাণ্ডে জড়ালে ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এমনকি যৌনবৃত্তি ও সমকামিতা প্রচারের জন্যও কমপক্ষে সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। নতুন এ আইনের খসড়া বিলে সমকামিতায় জড়ানোর জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছিল।
কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর তীব্র বিরোধিতার পরে পাস হওয়ার আগে এটি সংশোধন করা হয়। মৃত্যুদণ্ডের বিধান বদলে ফেলে সর্বোচ্চ শাস্তি ১৫ বছরের কারাদণ্ড করা হয়েছে। একইসঙ্গে পতিতাবৃত্তির জন্য কমপক্ষে ১০ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে। পতিতাবৃত্তি প্রচার করে এমন কারো জন্য কমপক্ষে সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। সংশোধিত আইনটি ‘ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা এবং প্রবণতার উপর ভিত্তি করে জৈবিক লিঙ্গ পরিবর্তন’কেও একটি অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
এ বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এলজিবিটিকিউদের অধিকারবিষয়ক প্রোগ্রামের উপপরিচালক রাশা ইউনেস বলেন, নতুন এ আইন ইরাকের এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অধিকার লঙ্ঘনের নজির এবং মৌলিক মানবাধিকারের ওপর গুরুতর আঘাত। বর্তমান বিশ্বে ৬০টির বেশি দেশে সমকামিতাকে আইনত অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলে জানিয়েছে আওয়ার ওয়ার্ল্ড। সংগঠনটির হিসাবে, ১৩০টির বেশি দেশে সমলিঙ্গের মধ্যে যৌন সম্পর্ক বৈধ।