অসমে সংখ্যালঘু শংসাপত্র পাবে ৬টি সম্প্রদায়, প্রস্তাব পাশ মন্ত্রিসভায়
গুয়াহাটি,২৯ মেঃ অসম মন্ত্রিসভা রবিবার ঘোষণা করেছে যে সরকার ছয়টি ধর্মীয় সম্প্রদায়কে ‘সংখ্যালঘু শংসাপত্র’ প্রদান করবে – মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন এবং পার্সি।
অসমের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী কেশব মহন্ত গুয়াহাটিতে মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের সামনে বলেন ‘এই প্রথমবারের মতো এই জাতীয় শংসাপত্রগুলি হস্তান্তর করা হবে।’
হটাৎ করেই কেন সংখ্যালঘু সম্পদ্রায়কে শংসাপত্র দেওয়ার প্রয়োজন হল। রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের মতে তবে কি সুকৌশলে এটা এনআরসি চাপিয়ে দেওয়ার একটা পদক্ষেপ।
সিদ্ধান্তের পিছনে যুক্তি ব্যাখ্যা করে, মহন্ত বলেন যে এটি সংখ্যালঘুদের ‘শনাক্তকরণে’ সাহায্য করবে। আমাদের সংখ্যালঘুদের জন্য অনেকগুলি পরিকল্পনা আছে, সংখ্যালঘুদের জন্য আমাদের আলাদা বিভাগও আছে, কিন্তু সংখ্যালঘু কারা? তাঁদেরকোনো পরিচয় নেই.
কেশব মহন্তর আরও দাবি অসম সরকার চায় সংখ্যালঘু সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা পান। কিন্তু তার সঙ্গে তাদের শংসাপত্র দিয়ে চিহ্নিত করার কেন প্রয়োজন পড়ল তার অবশ্য যথাযথ উত্তর মেলেনি। কেশব মহন্তর কথায়, অসম সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ড থেকে শংসাপত্রের জন্য অনুরোধ এসেছে।
সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হাবিব মুহাম্মদ চৌধুরী বলেছেন যে এই পদক্ষেপটি আসামের সংখ্যালঘুদের ‘উপকৃত’ করবে, বিশেষ করে সরকারী স্কিমগুলি পাওয়ার ক্ষেত্রে। সরকারি স্কিমের সুবিধা পেতে ইতিপূর্বে বহু মানুষ আমাদের কাছে এসেছে শংসাপত্র নিতে। বোর্ড সংশাপত্র দিলেও অনেক ক্ষেত্রে তা বাতিল হয়ে যায়। তাই এবার সরকারি শংসাপত্র হাতে থাকলে সুবিধা হবে।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সভাপতিত্বে গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তবে কিভাবে এবং কিকি তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই সার্টিফিকেট ইস্যু হবে সে ব্যাপারে কোনও নির্দেশিকা তৈরি হয়নি।
উল্লেখ্য এনআরসির বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন ধিকধিক করছে অসমে। তার মধ্যেই কেবলমাত্র সংখ্যালঘুদের জন্য সার্টিফিকেট ইস্যু করা নিয়ে আবার সিদুরে মেঘ দে’ছেন সংখ্যালঘুরা। প্রশ্ন উঠছে, সারা ভারতের কোথাও এভাবে সংখ্যালঘু সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয়নি, তাছাড়া সংখ্যালঘু কেবল মাত্র ধর্ম পরিচয় দিয়েই এত বছর সরকারি সুযোগ পেয়ে আসছেন সর্বত্রই তাই তাদের আবার সার্টিফিকেটের প্রয়োজন কেন হবে সরকারি স্কিমের সুবিধা নেওয়ার ক্ষেত্রে। সংখ্যালঘু উন্নয়ন নাকি আরও কোনঠাসা করে গলায় সার্টিফিকেট ঝুলিয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে? কেউ কেউ বলছেন দেশে বর্ণাশ্রম প্রথা চালু করার প্রথম ধাপ এই সংখ্যালঘু সার্টিফিকেট!