পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: গড় আগলাতে রবিবার গুজরাতে প্রচারে ছিলেন মোদি। রবিবাসরীয় প্রচারে মোদি বলেন, ‘এই গুজরাত আমি বানিয়েছি।’ বর্তমানে বিজেপি সব ভোটই তাঁকে সামনে রেখে লড়তে চাইছে।
পঞ্চায়েত হোক কিংবা পুরভোট, বিধানসভা হোক কিংবা লোকসভা, জয় নিশ্চিত করতে বিজেপির ভরসা সেই মোদিই। একথা অস্বীকারের উপায় নেই যে নিজের দলকে ছাপিয়ে বড় হয়ে গিয়েছে তার ছায়া। কিংবা আরএসএস হয়ত চাইছে, মোদিকে সামনে রেখে সবটা মোকাবিলা করতে। সব রাজ্যেই কমবেশি দলীয় কোন্দলে ভুগছে মোদির দল।
আলাদা করে বলার মতো উন্নয়ন ভোটমুখি রাজ্যগুলিতে হয়নি। মোদি নিজেও সে কথা বুঝেই কি রাজ্যবাসীকে নস্টালজিক করে ফায়দা নিতে চাইছেন? তাই কি তিনি প্রচারে বললেন, ‘এই গুজরাত আমি বানিয়েছি’। তার পর কি গুজরাতে বলার মত কিছু হয়নি। বাকি মুখ্যমন্ত্রীর কি আসলে পুতুল?
শনিবার হিমাচল প্রদেশেও প্রচারে গিয়ে মোদি বলেন, আমাকে দেখে ভোট দিন। হিমাচলে দলীয় কোন্দলে অস্থির বিজেপি। দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি সহ বহু অভিযোগ রয়েছে। ফলে নিজেদের নামের জোরে কতজন জয়ী হতে পারবেন তা নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মনে সন্দেহ রয়েছে। ফলে সেখানেও দলের ভরসা মোদি। তিনি নিজেও সে হিমাচলবাসীদের পরোক্ষে বুঝিয়ে দিযেছেন, বাকিদের ভরসা নাও করতে পারেন, কিন্তু তাঁকে ভরসা করুন। লোকসভা ভোট হলে এমন প্রচার চলে কিন্তু বিধাসভা ভোটে এমন প্রচার সবসময় কার্যকরী হয় না। তাতে সাময়িক ফল হলেও, আসলে দীর্ঘমেয়াদিতে তাতে ক্ষতি হয় দলের।
গুজরাত বিধানসভায় এবার বিজেপির কায়দাতেই তাদের প্যাঁচে ফেলার কৌশল নিয়েছে আপ। মোদির কায়দাতে কেজরি নিজেও নরম হিন্দুত্ব থেকে সরে এসে গরম হিন্দুত্বের রাজনীতি শুরু করেছেন। চতুর কেজরি জানেন, হিন্দুত্বে নরম হলেই মোদির দলে তাঁকে হিন্দু বিরোধী এবং মুসলিম তোষক প্রমাণ করে ছাড়বে। ফলে বিজেপির কায়দাতেই বিজেপিকে রাজনৈতিকভাবে চাপে ফেলতে চাইছেন কেজরিওয়াল। হিন্দুত্ব ও উন্নয়নের মিশ্রিত প্রচারে আপ, কংগ্রেসের কিছু আসনে থাবা বসাতে পারে,অন্তত ভোটপূর্বের জনমত সমীক্ষা তেমন ইঙ্গিত করছে।
গত সপ্তাহেই মোরবিতে মাচ্ছু নদীতে ঝুলন্ত সেতু ভেঙে দুর্ঘটনায় ১৩০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেই সময় গুজরাত সফরেই ছিলেন মোদি। এই ঘটনায় সরগরম হয়েছে গুজরাতের রাজনীতি। ভোটের আগে এই বিপর্যয়কে হাতিয়ার করে বিজেপিকে নিশানা করে বিরোধীরা। মোদি পোস্তার ব্রিজ বিপর্যয়ের সময় বলেছিলেন ‘অ্যাক্ট অফ ফ্রড।’ মোরবির মৃত্যুমিছিলের পর তাঁরই কথা তাঁকে ফিরিয়ে দেন বিরোধিতা। জমিনে নেমে মোদি বুঝেছেন সরকার বিরোধিতা আছে। ভোটের আগে মোদি মনে করিয়ে দিতে চাইলেন গুজরাতের তাঁর আমলের ‘সুশাসনের’ কথা। সেই শাসনের কথা মনে পড়লেই মুসলিমদের মনে পড়ে যায় ২০০২ এর দাঙ্গার কথা।