পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর অন্তত ৩৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দি, অধিকৃত পশ্চিমতীরে ফিরেছেন। এতে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে পুরো পশ্চিম তীর। দীর্ঘদিন পর প্রিয়জনকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা স্বজনরা। যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে ৩৯ জন কারাবন্দিকে মুক্তি দেয় ইসরাইল। শুক্রবার অধিকৃত পশ্চিম তীরে একটি ইসরাইলি কারাগারের সামনে জড়ো হন হাজারো ফিলিস্তিনি। এ সময় তারা ফিলিস্তিনের পতাকা, কেউ হামাসের সবুজ পতাকা নাড়িয়ে, স্লোগান-হাততালি ও চিৎকারের মাধ্যমে আনন্দ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া জেলমুক্ত ফিলিস্তিনিদের স্বাগত জানাতে পশ্চিম তীরজুড়ে আতশবাজি ফাটানো হয় ও দেশাত্মবোধক ফিলিস্তিনি সংগীত বাজানো হয়।
ফিলিস্তিনি বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের মিলিত হওয়ার আনন্দঘন মুহূর্তের ভিডিয়ো প্রকাশ পেয়েছে। দেখা যায়, ২০১৫ সালে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়া মারাহ বাকের নামে এক তরুণী তার পরিবারকে আলিঙ্গন করছেন। এ সময় তিনি বলেন, ইসরাইলি জেল থেকে যারা মুক্তি পাচ্ছে তাদের চিকিৎসা প্রয়োজন। কারণ, প্রত্যেক বন্দিকে কারাগারে কোনও চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। মারাহ বাকের এখন তার পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাবেন বলে জানিয়েছেন। এরপর একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করারও চিন্তা করছেন।
মুক্তি পেয়েছেন ফিলিস্তিনি বন্দি মালাক সুলাইমানও। এক ভিডিয়োয় দেখা যায়, ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে নিজের ঘরে ফিরে মাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। মালাক সুলাইমানসহ আরও অনেক ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তির পর সেজদা দিতে দেখা যায়। তারা হামাসের প্রশংসা করেন। একই দিনে মুক্তি পেয়েছেন ১৭ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি জামাল। তিনি বলেন, ‘অনুভূতি প্রকাশ করার মতো আমার কাছে কোনও শব্দ নেই, সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ।’ ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি ফরিদা নিজিম জানিয়েছেন, তাদেরকে সেখানে অনেক কষ্টে রাখা হয়েছিল। সাফ পানি ও পর্যাপ্ত খাবার তাদের দেওয়া হতো না।
নাবলুসের এই বাসিন্দা বলেন, ‘কারাগারে আমরা অনেক কষ্ট করেছি। আমরা অপদস্থ হওয়ার ঘটনা ফেলে এসেছি। তারা সবসময় আমাদের সাথে খুবই খারাপ আচরণ করত।’ ফরিদা বলেন, মুক্তি পাওয়ায় তিনি ‘খুবই খুশি।’ তিনি বলেন, ‘গাজার অধিবাসীদের প্রতিরোধের জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। আল্লাহ তাদেরকে ধৈর্য্য দিন।’
প্রসঙ্গত, গাজা উপত্যকা শাসন করে হামাস। আর ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীর শাসন করে মাহমুদ আব্বাসের সরকার। কিন্তু সেখানে সব কিছুই ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণাধীন। যেসব বন্দি মুক্তি পাচ্ছে তারা পশ্চিমতীরের বাসিন্দা। এসব বন্দিদের বছরের বছর ধরে বিনা বিচারে ইসরাইলের কারাগারে রাখা হয়েছিল।