পুবের কলম প্রতিবেদক: তিন তিনটি সংগঠন যৌথভাবে পার্ক সার্কাসের ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেস অ্যাসোসিয়েশন হলে ৩০ এপ্রিল আয়োজন করেছিল ঈদ মিলন অনুষ্ঠানের। কিন্তু এই অনুষ্ঠানটি প্রবল বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। উভয় পক্ষের পোস্ট এবং পালটা পোস্টে ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলিতে উত্তপ্ত ঝড় বইছে। আর তা আপাতত থেমে যাওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এই ধরনের বিতর্ক দীর্ঘদিন পর মুসলিম সমাজে দেখা গেল।
বিতর্কের কারণ হল, সমকামিতার প্রচারক অনুরাধা দোসাদ ‘কুয়ের মি’ বা ‘আমি সমকামি’ বলে একটি ইংরেজি কবিতা আবৃত্তি করেন। এলজিবিটি-র অ্যাক্টিভিটস হাসান ধাবক উর্ধাঙ্গে পাঞ্জাবি ও নিম্নাঙ্গে একটি চমৎকার শাড়ি পরে অনুষ্ঠানে আসেন। অনুরাধা দোসাদের ‘আমি সমকামি’ কবিতাটি পড়ার পর তরুণ সাংবাদিক নিজাম পারভেজ মঞ্চে উঠে প্রতিবাদ জানান যে, ঈদ মিলনে সমকামিতার সমর্থনে এই ধরনের কবিতা খুবই বেমানান। ইসলাম ও মুসলিমরা সমকামিতাকে সমর্থন করে না। এই সময় সঞ্চালক শহিদুল ইসলাম নিজামের কথা না শুনেই তাঁর হাত থেকে মাইক কেড়ে নেন। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে নিজামকে চুপ করিয়ে দিতে প্রথমে জনাব সাইফুল্লা এগিয়ে এসেছিলেন।
এরপর ভেসে আসতে থাকে নানা ধরনের ফতোয়া। শহিদুল ইসলাম চিৎকার করে বলেন, তাঁদের তিনটি সংগঠনের ঈদ মিলন উৎসব, মুসলিমদের কোনও অনুষ্ঠান নয়। তাঁর সমর্থনে ওরিয়েন্টাল মিডিয়া ফোরাম, বেস এবং আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের কর্মকর্তা ও সহযোগীরা নিজামকে প্রবলভাবে ধাক্কা দেন এবং কর্কশ কথা বলে তাঁকে হল থেকে বের করে দেন।
বেস-এর শেখ আবিদ হাসান ফতোয়া জারি করেন, ‘ইসলাম লেসবিয়ান, গে- এদের বিরুদ্ধে নয়’। তিনি আরও বলেন, তাঁদের সংগঠন বেস মুসলিম এজিবিটিআইকিউ-দের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল। গে ইমামও রয়েছে। ইসলাম পায়ুমইথুনেরও বিরুদ্ধে নয়। পয়গম্বর মুহাম্মদ সা. গে বা সমকামীদের তাঁর বাড়িতে পরিচারক হিসেবে নিযুক্তি দিতেন।’
শেখ আবিদ হাসানের এই ফতোয়া ও নয়া গবেষণা অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। শহিদুল ইসলাম-সহ বেস-এর কর্মকর্তারা বলছেন, আয়োজক তিনটি সংস্থা মোটেই মুসলিম সংগঠন নয়। ফলে নেট দুনিয়ায় শুরু হয়েছে সমকামী বনাম অসমকামি এক তীব্র লড়াই।