পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ইসলামে যা কিছু হারাম বলে ঘোষণা করা হয়েছে, তা থেকে দূরে থাকে ইসলাম প্রেমীরা। যেমন পশু জবেহ করার ক্ষেত্রে ইসলামে যে নিয়মাবলী অবলম্বন করতে বলা হয়েছে, সেই নিয়ম পালন না করা হলে, গোটা বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমানরা সেই খাদ্য গ্রহণ করেন না। যে কারণে কোনও রেস্টুরেন্টে গেলে প্র্যাক্টিসিং মুসলিমরা প্রশ্ন করেন যে সেখানে ব্যবহৃত মাংস হালাল কিনা। এমনকি ওষুধ ছাড়া কোনও খাবারে অ্যালকোহল ব্যবহার করা হলেও তাঁরা খান না। এখনও বাইরে খেতে গেলে মুসলমানদের মনে এই প্রশ্ন ঘোরে। এই দ্বিধা দূর করতে বিভিন্ন খাবারের দোকানে ও প্যাকেটে ‘হালাল’ সার্টিফিকেটের উল্লেখ থাকে। যে সার্টিফিকেট নিশ্চিত করে, যে সেখানে ব্যবহৃত মাংস ইসলামিক রেওয়াজ মেনে জবেহ করা হয়েছে বা সেখানে এমন কিছু ব্যবহার করা হয়নি, যা হারাম।
এখন হালাল পণ্যকে ‘আর্থিক জিহাদ’ নাম দিয়ে একটি ডকুমেন্টরি তৈরি করেছে হিন্দু জনজাগৃতি নামের একটি হিন্দুত্ববাদী সংস্থা। ওই ডকুমেন্টরিটি শেয়ার করা হচ্ছে সংখ্যাগুরুদের মাঝে, একথা প্রমাণ করার জন্য যে হালাল পণ্য বিক্রিও এক ধরণের জিহাদ। বেশ কিছু আন্তর্জাতিকমানের খাদ্য প্রস্তুতকারী সংস্থার নাম নিয়ে সেখানে বলা হয়েছে ওই সব খাবার বয়কট করার জন্য। শুধু খাবার নয়, ওই তালিকায় আছে প্রসাধনী সামগ্রীও।
ওই হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর মতে, অন্যায়ভাবে হিন্দুদের উপর জোর করে ওই সব পণ্য চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া হালাল পণ্য তৈরি করার জন্য সার্টিফিকেট দিচ্ছে জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ। ওই ডকুমেন্টরি অনুযায়ী জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ ভারতের বুকে সন্ত্রাসবাদী হামলায় যুক্ত সন্ত্রাসীদের আইনী রক্ষাকবচ দেয়। তাছাড়া, ভারতের মাটিতে ইসলামিক আধিপত্যবাদকে প্রতিষ্ঠা করতেই এমনটা করা হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে।
তাদের মতে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উচিৎ এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে হালাল সার্ফিফিকিকেট যুক্ত খাদ্য বর্জন করা।
ওয়াকিফহাল মহলের মতে, বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের পাশাপাশি সামনেই লোকসভা নির্বাচন। মেরুকরণের মাধ্যমে হিংসার পরিবেশ সৃষ্টি করতেই এখন ‘আর্থিক জিহাদ’ নামের ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্বকে সাম্প্রদায়িক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে গেরুয়া বাহিনী।