পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক:
কর্ণাটক পরীক্ষা কর্তৃপক্ষ (কে ইএ) বিভিন্ন কর্পোরেশন বোর্ডের পদ পূরণের জন্য ২৮ এবং ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য তরুণী পরীক্ষার্থীদের হিজাব পরার অনুমতি দিয়েছে।
হিন্দুপন্থী সংগঠনগুলি হিজাবের অনুমতি দেওয়ার জন্য কর্ণাটক পরীক্ষা কর্তৃপক্ষ –এর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে এবং এখন হিজাব ইস্যুটিকে আবার সামনে আনার চেষ্টা করছে।এদিকে, রাজ্য সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঘোষণা দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠন। উল্লেখ্য, গত বছরের জানুয়ারিতে উদুপি জেলার একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে হিজাব পরা ছয় ছাত্রীকে স্কুলে আসতে বাধা দেওয়া হয়। এর পর, কর্ণাটকে হিজাব নিয়ে একটি তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং কর্ণাটক সরকার স্কুলে মেয়েদের হিজাব পরা নিষিদ্ধ করেছিল। বিজেপিশাসিত তৎকালীন কর্ণাটক সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সে সময়ে রাজ্য জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল। এরপর বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতার পালা বদল হওয়ায় বর্তমান কংগ্রেস সরকার মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিয়েছে।
বিজেপি সরকারের আমলে হিজাব ইস্যুতে তোলপাড় হয়। কিছু হিন্দু ছাত্র দাবি করেছিল যে মুসলিম মেয়েরা ক্লাসে হিজাব পরলে তারা গেরুয়া শাল পরবে। এছাড়াও, গেরুয়া শাল জড়িত প্রতিবাদ এবং পাল্টা বিক্ষোভ শুধুমাত্র সমগ্র কর্ণাটকে নয়, পরে অন্যান্য রাজ্যেও ছড়িয়ে পড়ে।রাজ্যজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এখন হিজাবের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তবে তা ঠিক নয়, অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে হিন্দু জনজাগৃতি সংগঠন। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে তারা এর প্রতিবাদ করবে।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এমসি সুধাকর ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের মুসলিম পরীক্ষার্থী ও ছাত্রীদের সমস্ত পরীক্ষায় হিজাব পরে উপস্থিত থাকার অনুমতি দেওয়া হবে।
শিক্ষামন্ত্রী সুধাকর বলেন, রাজ্যে কংগ্রেস দল সরকার গঠনের পর মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে কর্ণাটকের মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরে সমস্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কর্ণাটকে শুধু স্কুল-কলেজের পরীক্ষায় নয়, সব প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায়ও ছাত্রীদের হিজাব পরে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ইতোমধ্যেই মহিলাদের হিজাব পরে ‘নিট’ পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে, তাই কংগ্রেস সরকারের সিদ্ধান্ত কোনওভাবেই ভুল নয়।
শিক্ষামন্ত্রী এমসি সুধাকর আরও বলেন, আমরা কোন ধরনের অসদাচরণ চাই না। যারা হিজাব পরেন, তাদের এক ঘন্টা আগে পৌঁছানো উচিত যাতে আমরা তাদের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করতে পারি। তিনি বলেন, অন্য কারও অধিকার লঙ্ঘন করা যাবে না। এটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ।