পুবের কলম প্রতিবেদকঃ ২৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মহান সুফি সাধক ‘বড়ো হুযুর পাক’- নামে খ্যাত হযরত সৈয়দ শাহ রশীদ আলী আলকাদেরী আল হাসানী আল হুসায়নী আল বাগদাদী পাকের চেহ্লুম পাক উপলক্ষ্যে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। তিনি ছিলেন কাদেরিয়া তরিকার প্রতিষ্ঠাতা বড়ো পীর সাহেব – গওসুল আযম দাস্তগীর – হযরত আব্দুল কাদির জিলানী পাকের ২২তম বংশধর ও সাজ্জাদানশীন। গত ৬ মুহাররম ইংরেজি ১৬ আগস্ট সোমবার বিকেল ৪.৫৫ মিনিটে তাঁর কলকাতার বাসভবন ৪ নং হাজী মুহাম্মদ মহসিন স্কোয়ারে তাঁর ‘বেসালে হক’- হয়েছিল।
মূল অনুষ্ঠানটি হয় মেদিনীপুর শহরের জোড়া মসজিদে ও তৎ-সংলগ্ন মাযার শরীফ চত্বরে। সেখানেই তাঁদের পারিবারিক মাযার শরীফ প্রাঙ্গণে তাঁর পবিত্র মাযার শরীফ নির্মিত হয়েছে। এই পবিত্র অনুষ্ঠানে ভাবগম্ভীর পরিবেশে প্রথমে
মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন ‘বড়ো হুযুর পাকের’ কনিষ্ঠ ভ্রাতা হযরত সৈয়দ শাহ রোওয়ায়শিদ আলী আলকাদেরী আল বাগদাদী ও ভ্রাতুষ্পুত্র হযরত সৈয়দ শাহ
ইয়াসুব আলী আলকাদেরী আল বাগদাদী।
মিলাদের পর বিভিন্ন বক্তা ‘বড়ো হুযুর পাকের’ সহজ- সরল-মধুর ব্যবহার ও অনুপম চরিত্র মাধুর্যের কথা তুলে ধরেন। তাঁর প্রপিতামহ মেদিনীপুরের ‘মওলা পাকের’ মতো তিনিও কঠোর আত্মসংযম ও কৃচ্ছসাধনায় সমগ্র জীবন অতিবাহিত করেন। দুনিয়ায় থেকেও তিনি দুনিয়ার প্রতি সম্পূর্ণ উদাসীন ছিলেন। তাঁর আব্বাজান (পর্দা হুযুর পাক)আরবি-ফারসি প্রভৃতি বিভিন্ন ভাষা ও কোরান- হাদিস-ফিকাহ্, ধর্মশাস্ত্র প্রভৃতি সমস্ত বিষয়ে সুপণ্ডিত ছিলেন। মহান পিতার সান্নিধ্যেই চলে তাঁর শিক্ষা ও সাধনা। প্রতিদিন নিয়ম করে তিনি আব্বাজানের কাছে কোরান- হাদিস প্রভৃতি বিষয়ে চর্চা করেন ও অসাধারণ ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। যমানার অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম হয়েও তিনি অত্যন্ত সাধারণ জীবন যাপন করতেন ও নিজেকে সমস্ত রকমের প্রচার থেকে দূরে রাখতে পছন্দ করতেন। তিনি ছিলেন প্রকৃতই ‘গরিবোঁ কা সাহারা’। জাতি-ধর্ম- বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত রোগ-শোক ও বিপদগ্রস্ত মানুষ তাঁর দরবারে ছুটে আসতেন ও ফায়েয হাসিল করতেন। এই মহান সুফি সাধক শরীয়তের কঠোর অনুশাসনে থেকে নিজের উন্নত ও মহান জীবনাদর্শের দ্বারা নীরবে মানুষকে হেদায়েত ও মানব- কল্যাণের কাজ করে গেছেন।
মেদিনীপুরের মূল অনুষ্ঠান ছাড়াও কলকাতার ২২নং খানকা শরীফ লেনের মসজিদ পাকে, বর্ধমানের মঙ্গলকোটের কারিকর পাড়ার কাদেরিয়া মসজিদ পাক এবং বিহারের পূর্ণিয়া জেলার হযরত রওশনগঞ্জ কাদেরিয়া মসজিদ পাকে এই দিনটি পালিত হয়। তাছাড়াও ভারত ও বাংলাদেশের কাদেরিয়া তরিকার সমস্ত খানকা শরীফ ও মসজিদ পাক যা এতদিন বড়ো হুযুর পাকের দ্বারা পরিচালিত ছিল সেই সব স্থানেই তাঁর স্মরণে এই মজলিশ পাক অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি অনুষ্ঠানই বর্তমান অতিমারির জন্য সরকারি বিধি মেনে পালিত হয়।