ভারতের প্রথম মুসলিম মহিলা শিক্ষক হিসেবে তাঁকে চেনে সারা বিশ্ব ।পরাধীন দেশে মেয়েদের লেখাপড়া শেখাতে উঠে পড়ে লেগেছিলেন তিনি। জ্যোতিরাও আর সাবিত্রীবাই ফুলের সঙ্গে মিলে ১৮৪৮ সালে খুলেছিলেন ইন্ডিজেনাস লাইব্রেরি, ভারতের প্রথম মেয়েদের স্কুলগুলির মধ্যে যা অন্যতম। সেই ফাতিমা শেখের ১৯১ তম জন্মবার্ষিকী আজ। তাঁকে সম্মান জানাতে নতুন ডুডল বানাল গুগল।
১৮৩১ সালে পুণেতে আজকের দিনেই (৯ জানুয়ারি )ফাতিমা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। জ্যোতিরাও আর সাবিত্রীবাই ফুলে যখন সমাজের নিম্নস্তরের মাঝে শিক্ষার আলো বিস্তার করতে উদ্যত হয়েছিলেন।স্বাভাবিকভাবেই নানা বাধার মুখে পড়েছিলেন। শিক্ষাকে আপন করার কারণে যেসব মহিলাকে সমাজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল ফাতিমা সেদিন তাঁদের আশ্রয় দিয়েছিলেন নিজের ছাদের নিচে। তারপর একসঙ্গে খুলেছিলেন মেয়েদের পড়ানোর স্কুল। নিজের বাড়ির ছাদে তিনি মেয়েদের পড়াশুনার জন্য একটি লাইব্রেরি খোলেন।
দলিত-সাধারণ হিন্দু এবং মুসলিম মেয়েরা সেসময় লেখাপড়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হতেন। মুসলিমদের থেকেও দলিতদের অবস্থা ছিল খারাপ। আক্রন মুসলিম মেয়েরা অনেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না গেলেও বাড়িতে লেখাপড়া করতেন। ধর্মীয় শিক্ষার জন্য তাদের সেটুকু করতে দেওয়া হত। কিন্তু বর্ণ হিন্দু ছাড়া অন্য হিন্দু মহিলাদের অবস্থা ছিল করুণ। তাদের ধর্মগ্রন্থেও অধিকার ছিল না।ফাতিমা এমন মানুষদের জন্য লড়াই করেছেন। ঘুরেছেন বাড়ি বাড়ি, বাবা-মায়ের কাছে হাত জোড় করে ভিক্ষা করেছেন তাঁদের মেয়েদের স্কুলে পড়ানোর জন্য।
ফাতিমা শেখ ছিলেন ‘সত্যশোধক সমাজ’ এর প্রতিষ্ঠাতা। শিক্ষার সুফল বোঝানোর জন্য জ্যোতিরাও আর সাবিত্রীবাই ফুলের সঙ্গে তিনি মানুষের দরজায় দরজায় যেতেন । মেয়েদের শিক্ষা কতটা জরুরি তা বোঝাতেন। সেই সঙ্গে হিন্দু সমাজের বর্ণপ্রথার বিরুদ্ধেও সরব ছিলেন তিনি। এইসব কর্মকান্ডের জন্য তিনি প্রভাবশালী শ্রেণীগুলির কাছ থেকে প্রবল প্রতিরোধের সম্মুখীন হন।তাদের অপমান করার চেষ্টা হয়েছিল।কিন্তু শেখ এবং তার সহযোগীরা অবিচল ছিলেন নিজেদের লক্ষ্যে। উর্দু পাঠ্যবইতে ফাতিমার কথা পড়ানো হয়। তাঁর জন্মদিনে ভারতের এই দামাল নারীকে সম্মান জানাল গুগল।