পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: কর্নাটকের হিজাব আন্দোলনের স্মৃতি উসকে দিল জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগর। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা- শ্রীনগরের রায়নাওয়ারি। সেখানকার বিশ্বভারতী হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে এতদিন ইসলামিক ঐতিহ্য মেনেই ছাত্রীরা আবায়া (বোরখার মত পোশাক) পরে আসতেন। হঠাৎ করে বুধবার স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের জানিয়ে দেয়, স্কুল চত্বরে আবায়া পরে তারা ঢুকতে পারবে না। স্কুলে ঢুকতে গেলে তাদেরকে আবায়া খুলে আসতে হবে। এই নির্দেশিকার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ শুরু করে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রীরা।
ছাত্রীদের বক্তব্য, ওই স্কুলটি প্রথমে মেয়েদের জন্যেই ছিল। পরে সেখানে কো-এডুকেশন শুরু হয়। তাদের বক্তব্য, স্কুল কখনই তাদেরকে বাধ্য করতে পারে না ছেলেদের সামনে আবায়া খুলে থাকার জন্য। এটাতে তারা অভ্যস্ত নয়। অতএব এটা তারা মেনে নেবে না।
এক ছাত্রীর মতে, স্কুল ম্যানেজমেন্ট জানিয়েছে, কিছু ছাত্রী আবায়া পরছে বলে, তা দেখে অন্যরা প্রভাবিত হয়ে তারাও পরতে চাইছে। অতএব স্কুলে আবায়া পরা যাবে না।
শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকজন ছাত্রীর অভিযোগ, তারা আবায়া পরার দাবি জানালে তাদেরকে মাদ্রাসায় পড়ার নিদান দেওয়া হয়। এক ছাত্রীর মতে, স্কুলের প্রিন্সিপাল খোদ তাদেরকে বলেছেন, সমাজের অংশ হতে চাইলে, তাদেরকে আবায়া পরা বন্ধ করতে হবে।
ফারহানা মঞ্জুর নামে এক ছাত্রীর অভিযোগ, তারা স্কুলে ভালো ফল করা সত্ত্বেও শুধুমাত্র পোশাকের জন্য তাদের সঙ্গে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ অন্যান্য দায়িত্ব থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
শিক্ষা আর ইসলামিক ঐতিহ্যের মধ্যে কোনও একটা বেছে নিতে হলে ছাত্রীরা কোনটা বেছে নেবে, এমন প্রশ্ন করা হলে ছাত্রীরা জানায়, ইসলামিক ঐতিহ্যই তাদের কাছে বেশি মূল্যবান। এমন পরিস্থিতি আসলে তারা স্কুলে ছাড়তে রাজি, কিন্তু আবায়া নয়। আবায়া পরেই শিক্ষার অধিকার তারা আদায় করবে।
প্রথমে ছাত্রীদের এমন নির্দেশ দিলেও, পরে নিজের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে সংবাদমাধ্যমের সামনে অন্য কথা বলেছেন স্কুলের প্রিন্সিপাল। তিনি বলেন- ছাত্রীরা বিভিন্ন রং ও নকশার আবায়া পরে আসে, সেই জন্যেই তাদেরকে বলা হয়েছিল সাদা রং এর আবায়া পরে আসতে। যাতে ইউনিফর্মের সঙ্গে সেটাকে মানানসই বলে মনে হয়।
২০২২ সালে হিজাব নিষিদ্ধ করা হয় কর্নাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সেই সময় তৎকালীন বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তের জেরে স্কুল ছুট হয় বহু ছাত্রী। এখন নতুন করে ওই একই জুলুমের অভিযোগ করছে বিশ্বভারতী হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের ছাত্রীরা।