দেবশ্রী মজুমদার, বীরভূম: করোনা সচেতনতাকে সামনে রেখে এবছরের পুজোয় আয়োজন করেছে বড়শাল সর্বজনীন দুর্গাপুজো। এই পুজো মহিলা পরিচালিত। সদস্যাদের কথায়, আমরা কেউ অমল হব না”। এই ক্যাসপশনে একটি প্রচার চালায় তারা। যার মধ্যে প্রধান বার্তা ফুটে উঠেছে, রবি ঠাকুরের অমল ও দইওয়ালার অমলের গৃহবন্দী দশার পুনর্নিমাণের মাধ্যমে। সতর্ক করে বলা হয়েছে, অতিমারি আবার নেমে আসবে যদি আমরা সচেতন না হই। সেক্ষেত্রে করোনায় কি করণীয়, তা তুলে ধরা হয়েছে কথা, গান, ফেস্টুন, ইত্যাদি সহ যোগে ভার্চুয়াল জগতে প্রচারের মাধ্যমে। এছাড়াও মুখ্যরমন্ত্রীর বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের কথাও বলা হয়েছে। বিভিন্ন চরিত্রে পাড়ার কচিকাঁচারা, পুজো কমিটির সদস্যমরা অংশগ্রহণ করে ভার্চুয়াল মাধ্যতমে। পরিচালনা করে স্বাগতা বন্দ্যো পাধ্যাায়। যোগ্য সঙ্গতে ছিলেন প্রিয়াঙ্কা মুখোপাধ্যা য় ও সেক্রেটারি শ্রাবণী মজুমদার।
শ্রাবণী মজুমদার বলেন, লকডাউনে নিশ্চিতরূপে বন্ধ হয়ে যেত পারত গ্রামের একমাত্র বারোয়ারি পুজো। কারণ গ্রামে বেশিরভাগ মানুষ খেটে খাওয়া আর কিছু পেনশনভোগী। এমতাবস্থায় কার কাছে চাঁদা চেয়ে দুর্গাপুজোর মতো ব্যয়য়বহুল উৎসব চালানো যায়? তবুও মহিলা পরিচালিত বড়শাল সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির মনে একটা জোর ছিল সরকারি অনুদান তো আছে! আর সে বছরই বাড়িয়ে পঞ্চাশ হাজার করা হল। আর দেখে কে! আমাদের স্বল্প বাজেটের পুজো। তবে বস্ত্র বিতরণ ও সামাজিক মাধ্যনমে বিভিন্নভাবে কোভিডের বিরুদ্ধে প্রচারে আমরা শামিল হয়েছি।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে এই বারোয়ারি পুজোর পত্তন হয়। গ্রামের কয়েকজন যুবক গ্রামের বড়োদের নিষেধ উপেক্ষা করে এই পুজো শুরু করে। তাদের যুক্তি ছিল, সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়ির পুজো মন্দির বন্ধ। কোনও আনন্দ থাকে না। জৌলুস দেখতে রামপুরহাট যেতে হয়। এবার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জমিয়ে রাখব গ্রামের পুজো। সদস্য দের কেউ মাঠে মুনিশ খেটে, বাড়িতে নিজের ও পরিবারের লক্ষ্মীর ভাড় ভেঙে চাঁদা সংগ্রহ করে। তারপর বিভিন্ন লোকের কাছে সাহায্য নিয়ে পুজো শুরু করে। বেশ কয়েক বছর হৈ হৈ করে পুজো বেশ আড়ম্বরে হয়। কিন্তু সেই পুরানো সদস্যরা পেটের তাগিদে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে। বর্তমান গ্রামের যুবকদের পুজোর ব্যা পারে কোনও আগ্রহ নেই। যে কজন আছে তারা নিজেদের ভবিষ্যত গড়ার কাজে পড়শোনা কোচিং নিয়ে ব্যেস্ত।
বর্তমান দুর্গা বড়শাল দুর্গোৎসব পুজো কমিটির সম্পাদক শ্রাবণী মজুমদার বলেন, সরকারি অনুদানের ভরসাতেই এই পুজো। মুখ্যপমন্ত্রীকে এজন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। গতবার কোভিডের কারণে রিহার্সাল করা অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করতে পারি নি। তবে গতবারের মতো এবারও স্মরণিকা পত্রিকা বের হচ্ছে।
গ্রামের বৌ মেয়েরা মিলে পুজো করলেও, পুরুষরাও পাশে আছেন। বিশেষ করে শান্তনু মুখোপাধ্যায়, চন্দন মুখোপাধ্যায়, শান্ত মুখোপাধ্যায়, ত্রিদিব ভট্টাচার্য ও দেবশ্রী মজুমদারের কথা বলতেই হয়।