পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত অসম। টানা ভারী বৃষ্টির জেরে ভূমিধস ও বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা। এখনও ৮ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গিয়েছে। ২০টি জেলার দু লক্ষ মানুষ গৃহহীন। প্লাবিত ২২২টি গ্রাম। গতকালই তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছিল। তিনজনের মধ্যে এক শিশু ছিল। সব থেকে ভয়ঙ্কর অবস্থায় হোজাই ও কাছাড় জেলা। নগাঁও জেলার যমুনামুখ গ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের উদ্ধারে ট্রাক্টর নামানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ১০৩২১.৪৪ হেক্টর চাষের জমি। ভূমিধসে প্রায় ২০২টি বাড়ি ক্ষতির মুখে। দুর্যোগ এলাকায় উদ্ধারে নেমেছে নৌসেনা, এনডিআরএফ, দমকল বিভাগ।
ভারতীয় রেলওয়ের পক্ষ থেকে ২৯টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। প্লাবিত নিউ হাফলং স্টেশন। ভূমিধসের কারণে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেন ট্র্যাক থেকে ভেসে গিয়েছে। অসম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির বুলেটিন অনুযায়ী, ১,৯৭, ২৪৮ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। এর মধ্যে হোজাই এবং কাছারে ক্ষতির মুখে যথাক্রমে ৭৮,১৫৭ ও ৫১, ৩৫৭ মানুষ।
অসমে ১৮ তারিখ পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আইএমডি। অসম, মেঘালায়, মণিপুর, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ চলবে আগামী কয়েকদিন। বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে আরও বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে সরকারের তরফে ৫৫টি রিলিফ ফান্ড ও ১২টি জরুরি সামগ্রী বিতরণী কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ৩২,৯৫৯ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র নদ ও কামপুরের কোপালি নদী। ধসের কবলে নিউ কুনজুং, ফিয়াংপুই, মৌলহোই, নামজেউরাং, দক্ষিণ বাগেতার, মহাদেব টিল্লা, কালিবাড়ি, উত্তর বাগেতার, জিওন এবং লোদি পাংমৌল গ্রাম। দুর্গত এলাকাগুলিতে মানুষকে নিরাপদে সরানোর কাজে মোতায়েন আছে ভারতীয় সেনা, আধাসামরিক বাহিনী, দমকল ও জরুরি পরিষেবা, বেসামরিক বাহিনী, প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক।
এদিকে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে নগাঁও কামপুর এলাকার ১৬ হাজার মানুষ। অন্যদিকে গেরামলামরা গ্রামের মাইবাং টানেলের সংযোগকারী রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ডিটোকচেরা স্টেশনে আটকে পড়া প্রায় ১৬০০ রেল যাত্রীকে গতকাল উদ্ধার করে বদরপুর এবং শিলচরে পাঠায় উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে। ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের টিকিটের দাম ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে রেলওয়ে। ইতিমধ্যেই ১০০৬ যাত্রীর ৮ লক্ষ টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাকি ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীরা তাদের ফেরত দাবি করতে পারেন IRCTC ওয়েবসাইটে ও সংশ্লিষ্ট স্টেশনের PRS কাউন্টারে আবেদন করতে বলা হয়েছে।