দেবশ্রী মজুমদার, মুরারই, ২৯ জুলাইঃ কেডি এম সোনার পাত কুড়িয়ে পেয়ে ফেরত দিলেন বছর তিরিশের ফিরদৌস বেগম। পেশায় মহিলা টেলার। সংসারে উদয়াস্ত খাটুনি তাঁর কাছে গর্বের। তাই আয়াসে পথের মধ্যে কুড়িয়ে পাওয়া সোনার পাত ফেরত দিতে পারেন। বুধবার নিজের দোকান থেকে বেরিয়ে ব্যঙ্ক যাওয়ার পথে কুড়িয়ে পান ওই কেডিএম সোনার পাত। সামনে এক স্বর্ণকারের দোকানে দেখিয়ে তিনি নিঃসন্দেহ হন যে ওটা সোনার পাত। আর তখনই নিজের ঠিকানা ও সোনার পাতের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে প্রকৃত মালিককে প্রমাণ দিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন জানান। যাইহোক সেই পোস্ট দেখে মুরারইয়ের শুভ চৌধূরী নামে এক ব্যক্তি কমেন্ট বক্সেই তাঁর সাথে যোগাযোগ করেন এবং বৃহস্পতিবার বিকেলে সোনার পাতটি ফেরত নিয়ে যান। শুভ চৌধূরী জানান, সোনার দোকানে যাওয়ার পথেই তাঁর পকেট থেকে ওই পাতটি পড়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তিনি পান নি।
ফেসবুকে কমেন্ট বক্সে তাঁর প্রশংসায় ভরে যায়। ফিরদৌসি বেগম বলেন, “ যা আমার নয়, তাতে আমার কোন হক নেই। পরিশ্রম করে রোজগার করে অনেক আনন্দ পাই”। এখানেও তিনি একটু আলাদা বৈকি। শুধু নিজের জন্য ফিরদৌস উপার্জন করেন, এমন বললে পুরোটা বলা হবে না। নিজে পোশাকের কালেকশনের দোকান সামলানোর পাশাপাশি টেলারিংয়ের একটি স্কুল চালান।
ফিরদৌসি বেগমের বাড়ি বীরভূমের মুরারই থানার বাহাদুরপুর পঞ্চায়েতের তপনা গ্রামে। বাবা দস্তুর রহমানের খুব আদরের মেয়ে। ছয় ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট ফিরদৌস বেগম। মুরারই ডিগ্রি কলেজ থেকে স্নাতক। এখনও বিয়ে থা করেন নি। নিজেই শুধু স্বাবলম্বী নন, বিভিন্ন বয়সের মেয়েদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করে চলেছেন। মুরারইয়ের ধিতোরা গ্রামের মাদ্রাসার কাছে মেয়েদের এক বছর কোর্সের টেলারিং শেখানোর জন্য একটি ট্রেনিং স্কুল আছে তাঁর। সেখানে জনা তিরিশের বিভিন্ন বয়সের ছাত্রী। শেখানো হয় বিভিন্ন ডিজাইনের মহিলা পোশাকের কাট। মুরারই ডিগ্রি কলেজের সামনে আছে ফেরদৌস লেডিজ টেলার্স এণ্ড কালেকশন দোকান আছে তাঁর। নিজে ধার্মিক মনোভাবাপন্না। দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়েন। আর দিনের শেষে কোন মলিনতা ছাড়াই নিশ্চিন্তে ঘুমুতে যান।