গাজা, ৩০ মে: ফিলিস্তিনের গাজার রাফায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় তারকা, খেলোয়াড় এবং সাধারণ মানুষসহ অনেকে ‘অল আইজ অন রাফাহ’ লিখে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। মূলত রাফার শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি বিমান হামলায় ৪৫ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার প্রতিবাদে অল আইজ অন রাফাহ লিখে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। তবে সেখানে প্রতিদিনই বহু মানুষ মারা যাচ্ছে। মৃত্যুমিছিল থেমে নেই। নৃশংসতার চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে ইসরাইল। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৩ জনকে হত্যা করেছে ইসরাইল। এর মধ্যে রাফাতেই ৩৭ জন সিভিলিয়ানকে আশ্রয় শিবিরে হামলার মাধ্যমে হত্যা করেছে হানাদার বাহিনী।
View this post on Instagram
৩৬ হাজার পার হয়েছে নিহতের সংখ্যা। একদিকে যেমন শরণার্থীরা পালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি অভিযানের মুখে পড়ে, তেমনই প্রতিরোধ জারি রেখেছে মুক্তিকামী হামাস। পালটা হামলার মুখে পড়ে বারবার থামতে বাধ্য হচ্ছে ইসরাইলের সাঁজোয়া যান। তীব্র ভয়ংকর যুদ্ধ চলছে রাফার রাস্তায়। রাফার কেন্দ্রস্থলে এই সংঘর্ষে জীবন বাজি রেখে লড়ছেন হামাস যোদ্ধারা।
এদিকে হানাদার বাহিনীর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী সামাজিক মাধ্যমে চলমান আন্দোলনের জবাবে ইসরাইলও পাল্টা প্রপাগান্ডা শুরু করেছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইল ভূখণ্ডে হামাসের হামলার এআই দিয়ে তৈরি করা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করেছে। যেখানে একটি শিশুর সামনে বন্দুক হাতে হামাসের যোদ্ধা দাঁড়িয়ে আছে। ছবিটি শেয়ার করা হয়েছে ইসরাইল সরকারের অফিশিয়াল পেজ থেকে। ছবিটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘আমরা কখনোই ৭ অক্টোবরের বিষয়ে কথা বলা বন্ধ করব না। জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত আমরা যুদ্ধ বন্ধ করব না।’
মূলত গোটা বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা ভূখণ্ডের রাফায় আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে যে পোস্ট করছে, সেখানেই উল্লেখ করা হচ্ছে ‘অল আইজ অন রাফাহ’। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত রবিবার রাতে দক্ষিণ গাজার রাফায় শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলের হামলায় নারী-শিশুসহ ৪৫ জন নিহত হন। এমন হামলার পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দাবি, রাফায় হামলা ছিল একটি ‘মর্মান্তিক দুর্ঘটনা’। শুরুতে ইসরাইলি সেনারা দাবি করেছিল, হামাসের ঘাঁটিতে সফল অভিযান চালানো হয়েছে। যাতে বেশ কয়েকজন হামাস কমান্ডার নিহত হয়েছেন। কিন্তু শরণার্থী শিবিরে হামলার তথ্য সামনে আসতেই নিন্দায় সরব হয় বিশ্ব। আর তারপর থেকেই ট্রেন্ডিংয়ে ‘অল আইজ অন রাফাহ’।
ছবিটি প্রাথমিকভাবে ইনস্টাগ্রামের স্টোরিজ ফিচারের মাধ্যমে শেয়ার করা হয়। যারা এটি শেয়ার করেছেন, তাদের মধ্যে ‘ব্রিজারটন’ তারকা নিকোলা কফলান, গায়ক-গীতিকার কেহলানি এবং ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা বরুণ ধাওয়ানসহ রয়েছেন প্রভাবশালী অনেক ক্রীড়াবিদ এবং সেলিব্রিটি। ক্রিকেটার রোহিত শর্মার স্ত্রীও এটি শেয়ার করেছিলেন। তবে জয় শ্রী রাম বাহিনীর চাপের মুখে তিনি পোস্টটি মুছে ফেলেন।
Madhuri Dixit too deleted her Propaganda Story
Hail RW Trolling pic.twitter.com/edyXTfWcQJ
— Randomsena (@randomsena) May 29, 2024
নিজস্ব প্ল্যাটফর্মগুলোতে রাজনৈতিক বিষয়বস্তুর বিস্তারকে সীমিত করার জন্য মেটা প্রচেষ্টা চালালেও, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক এবং ফিলিস্তিনি সমর্থকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে ইনস্টাগ্রাম। এনবিসি বলছে, ‘অল আইজ অন রাফাহ’ ছবিটি যখন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, ঠিক তখন রাফাহ থেকে পোস্ট করা ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের অনেক ভিডিও ব্লক করা হয়েছে এবং কিছু ক্ষেত্রে ইসরাইলি হামলার গ্রাফিক্যাল ছবিকেও ‘ভায়োলেন্স’ কিংবা ‘সংবেদনশীল’ দেখিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।