দেবশ্রী মজুমদার, রামপুরহাট: সততাই ব্যবসার একমাত্র মূলধন। এই আপ্তবাক্যটি আজও শোনা গেলেও ব্যবহারিক জীবনে তার খুব একটি দেখা মেলে না। এবার বীরভূমের রামপুরহাটে সেই সততার নজির গড়লেন এক প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী। হোটেলের বাইরে পরিত্যক্ত ৪ লক্ষ ৪৮ হাজার ৫০২ টাকা ফেরত দিলেন তিনি। জানা গেছে, এই বিপুল পরিমাণ টাকা হোটেলের বাইরে ভুলক্রমে ফেলে চলে যান এক ব্যবসায়ী। সেই টাকা হাতে পেয়ে যত্ন করে তুলে রেখে দেন লক্ষ্মী অনুষ্ঠান ভবনের মালিক। এর পরের দিন সকালে ওই টাকা মালিকের প্রতিনিধির হাতে তুলে দেন তিনি। টাকা ফেরত পেয়ে খুশি প্রদীপ মিশ্র নামে কলকাতার এক ব্যবসায়ী।
কলকাতার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু রোড, বড় বাজার এলাকার ব্যবসায়ী প্রদীপ মিশ্র। ব্যবসার কাজে বীরভূমের রামপুরহাটে যান। তিনি সেখানে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে এই ভবনে ওঠেন। গত রবিবার সকালে হোটেল ছেড়ে যাওয়ার সময় একটি প্লাস্টিকে মোড়া ৪ লক্ষ ৪৮ হাজার ৫০২ টাকা হোটেলের বাইরে একটি চেয়ারের উপর ফেলে রেখে হোটেল ছেড়ে রায়গঞ্জের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান তিনি। কেউ কেউ ওই চেয়ারে প্লাস্টিকের প্যাকেট দেখে আবর্জনা ভেবে ফেলে দিতে যান। কিন্তু ভবনের মালিক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল সেই প্যাকেট সযত্নে নিজের হেফাজতে রাখেন। বিকেলের দিকে সেই প্যাকেট খুলে দেখেন কয়েকটি ৫০০ টাকার বান্ডিল। টাকার মালিককে জানতে সিসিটিভি ক্যামেরায় ফুটেজ মিলিয়ে দেখতে শুরু করেন তিনি। সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পান, বেলা ১০ টার পর ওই টাকার বান্ডিল চেয়ারে অসাবধানতাবশত ফেলে গিয়েছিলেন প্রদীপ মিশ্র নামে ওই ব্যবসায়ী। এরপরেই ভবনের মালিক প্রদীপ মিশ্রর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে সেই টাকা ফিরিয়ে দিলেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, “সততাই আমাদের মূল ধন। তাই ওই টাকার বান্ডিল পাওয়ার পরও আমার মনে একটুও লোভ আসে নি। তবে একটা আশঙ্কাও এখন মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। এই দিন অনুষ্ঠান ভবনে একটি শ্রদ্ধানুষ্ঠান ছিল। ফলে বেশ কিছু মানুষ ওই রাস্তা দিয়ে লজে যাতায়াত করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ যদি ওই টাকা নিয়ে নিতেন, তাহলে বদনামের ভাগ আমাদের ভাগ্যে জুটতো“।