পুবের কলম প্রতিবেদক: বছর ১১ আগে বিয়ে হয়েছিল। তিন বছরের মাথায় যমজকন্যা সন্তানের জন্ম। তাতেই শ্বশুর বাড়ির সমস্ত রাগ এসে পড়ে গৃহবধূর উপরে। স্ত্রীকে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন স্বামী। কোনভাবেই সম্পর্ক রাখতে চায়নি। আদালত পর্যন্ত গড়ায় বিষয়টি। মামলার দীর্ঘসূত্রিতায় ধৈর্য হারায় মহিলা। রবিবার দুপুরে গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় শ্বশুরবাড়ির দরজায় হাজির হয়। কুড়ুল দিয়ে শ্বশুরবাড়ির দরজার তালা ভেঙে জোর করে ঢুকলেন ওই গৃহবধূ। পাশে দাঁড়ালেন গ্রামবাসী। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার বেলিয়াঘাটা গ্রামের ঘটনা। জানাবযায় দাসপুরের কুমারচক গ্রামের বাসিন্দা মৌমিতা ঘোড়ইয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় দাসপুরের বেলেঘাটার বিদ্যুৎ ঘোড়ইয়ের। বিয়ের পর থেকে সংসার চলছিল সুখের। বিয়ের তিন বছরের মাথায় মৌমিতার দুই যনজ কন্যা সন্তানের জন্মের পর থেকে অশান্তি শুরু। বিদ্যুৎ ও তার পরিবারের সদস্যরা মৌমিতাকে পাঠিয়ে দেয় তার বাপের বাড়িতে। কন্যা সন্তান হওয়ার কারণে মৌমিতাকে আর বাড়িতে ফিরিয়ে আনার কোন উদ্যোগ নেয়নি বিদ্যুৎ সহ তার পরিবারের সদস্যরা।
কোন উপায় না পেয়ে একাধিকবার গ্রামবাসী থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয় মৌমিতা। তাও মন গলেনি বিদ্যুতের পরিবারের। এই নিয়ে ইতিমধ্যে মৌমিতা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন বিষয়টি। গত ৮ বছর ধরে এই জটিলতা চলছে তার। সমাধান না হওয়াই ধৈর্য হারায় মৌমিতা। সেই মৌমিতাই রবিবার দুপুরে, স্থানীয় কিছু মানুষজনের সহযোগিতায় জোরপূর্বক স্বামীর বাড়িতে এসে হাজির হয়। গ্রামবাসীরা মৌমিতাকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
মৌমিতার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না, অন্যত্রে গা ঢাকা দিয়েছে বলে খবর। তাই বাড়ির বাইরে লাগানো তালা কুড়ুল দিয়ে ভেঙে দেন ওই গৃহবধূ। পরপর দরজার তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেন তিনি।
মৌমিতা দাবি তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছে তাকে ডিভোর্স না দিয়ে। এদিকে মৌমিতার পাশে দাঁড়িয়েছেন বেলাঘাটা গ্রামবাসীরা।, বিদ্যুৎ ভাই প্রদ্যুত করের দাবি, বিষয়টি বিচারাধীন আদালতে, দাদার দ্বিতীয় বিয়ে করেনি এই বিষয়ে বিশেষ কিছু বলব না। তবে গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দা গুরুপ্রসাদ অধিকারী বলেন, ওই গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা একটু জটিল। কন্যা সন্তান হওয়ার অপরাধে বাড়ি থেকে গৃহবধূকে বের করে দিয়েছেন। আমরা গ্রামবাসীরা পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরাই গ্রাম থেকে ডাকিয়ে এনে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে বলেছি। তাই ঐ বধূ কুড়ুল দিয়ে দরজার তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেছে। এরপরে ওই বধূর উপর কোন রকম আক্রমণ হলে আমরা গ্রামবাসীরা ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে গ্রাম ছাড়া করব।”