পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে নিষেধাজ্ঞাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে পশ্চিমারা। রুশ তেল, গ্যাসসহ সকল প্রকার জ্বালানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও। তবে রাশিয়ার জ্বালানির ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল ইইউ। এখন তাদের সবচেয়ে বড় মিত্র আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কারণে এই সংস্থাভুক্ত দেশগুলো বিপাকে পড়েছে। জ্বালানি ইস্যুতে বিভক্ত হয়ে পড়েছে ইউরোপীয় দেশগুলি। নতুন এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছে বেশ কয়েকটি দেশ, যার মধ্যে অন্যতম হাঙ্গেরি।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রুশ জ্বালানির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তিনি মানবেন না। কেননা, মস্কোর গ্যাস ছাড়া চলতে পারবে না দেশটি। ব্রিটেন, পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক ও স্লোভাকিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানরা এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকটি শেষে হাঙ্গেরির সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিবৃতি দেন ভিক্টর। বলেন, ’ইউক্রেনে রুশ হামলার নিন্দা জানাই। তবে এই দুই দেশের সংঘাতের মূল্য আমাদের জনগণের ওপর চাপানো যাবে না।
রাশিয়ার গ্যাসে হাঙ্গেরির ৯০ শতাংশ মানুষের ঘর উষ্ণ থাকে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞা মানতে গেলে মস্কোর তেল-গ্যাস ছাড়া অচল হয়ে পড়বেন তারা, মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এরইমধ্যে রাশিয়ার ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞাগুলোর বিরূপ প্রভাব পড়েছে, মুদ্রার মান রেকর্ড পরিমাণ কমে গেছে। নেদারল্যান্ডসও এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চিন্তিত। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট বলেন, রাশিয়া থেকে ইইউ দেশগুলোয় তেল ও গ্যাস আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করা অসম্ভব।
তিনি বলেন, `রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর আমাদের যে নির্ভরশীলতা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। দেশটি থেকে গ্যাস ও তেল আমদানি বন্ধ চাই না আমি। উল্লেখ্য, গতকালই রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আমেরিকা। রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নও পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। কিন্তু এরই মধ্যে ইউরোপের বহু দেশ নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে পিছিয়ে আসছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে রুশ প্রেসিডেন্টে মুখপাত্র পেসকভ বলেন, রাশিয়া সবসময় জ্বালানির নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
তবে এখন আমরা অবশ্যই পাল্টা জবাবের বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করব।’ তিনি আরও বলেন, ’প্রেসিডেন্ট বাইডেন কিছু সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। এ পরিস্থিতি গভীর বিশ্লেষণের দাবি রাখে। রাশিয়া কী করবে জানতে চাইলে আমি বলব, রাশিয়া তার স্বার্থ সংরক্ষণে যা করা দরকার তাই করবে। আমেরিকা সত্যিই রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এদিকে, রুশ বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিক দিমিত্রি বিরিশেভস্কি বলেন, ’পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। আমাদের জবাব হবে ক্ষিপ্র যা তাদের জন্য কষ্টকর হবে।