পুবের কলম প্রতিবেদক, বসিরহাট: আগের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীসহ ইডি অভিযান হল সন্দেশখালির শেখ শাজাহানের বাড়িতে। চলতি মাসের ৫ তারিখ কলকাতা থেকে সকাল সকাল সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়ি অভিযানে রওনা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সংস্থা। তারপর কেন্দ্রীয় বাহিনীর সহ ইডির ওপর হামলা হয়েছিল। ইডি আধিকারিকদের মাথাও ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আর এই হামলার পর সেদিন কার্যত পিছু হটেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় হওয়ার পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতেও ঝড় তুলেছিল। যদিও অধরাই রয়ে গেলেন সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শেখ শাহাজান। পূর্বের সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে দীর্ঘ উনিশ দিন পর এক কোম্পানির বাহিনী নিয়ে বুধবার সাতসকালে শাহজাহানের দুয়ারে ইডির আধিকারিকরা হাজির হন।
স্থানীয় দুই বাসিন্দাকে সার্চ ওয়ারেন্টে সই করিয়ে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। বলা যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী একেবারে বজ্র আটুনি প্রস্তুতি নিয়ে পথে নেমেছে। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে এবার রয়েছে ঢাল, লাঠি এবং কাঁদানে গ্যাস। মোড়ে মোড়ে পুলিশি তৎপরতা। সরবেড়িয়া বাজার, আকুঞ্জিপাড়া মোড় সর্বত্র পুলিশি টহল ছিল চোখে পড়ার মতো। পরিস্থিতি যদি পূর্বের মতো হয় তাহলে সাথে সাথে নিয়ন্ত্রণে আনার সমস্ত প্রক্রিয়া এবং ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফ থেকে। পাশাপাশি শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান এবং তালা ভাঙ্গার সমস্ত প্রক্রিয়াসহ অভিযানের সমস্ত প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে ইডি আধিকারিকদের পক্ষ থেকে।
অন্যদিকে বসিরহাটে তৃণমূলের প্রকাশ্য জনসভায় ইডি সিবিআই নিয়ে ফের একবার সরব হলেন সেচমন্ত্রী, দমকল মন্ত্রসহ তৃণমূল নেতারা। বসিরহাট প্রান্তিক মাঠে তৃণমূলের এক প্রকাশ্য জনসভায় দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ,পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, সভাপতি হাজী শেখ নুরুল ইসলাম, রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সুরজিত মিত্র, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ বুরাহনুল মোকাদ্দিম, বসিরহাট পৌরসভার চেয়ারম্যান অদিতি মিত্র রায় চৌধুরী, বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূলে কোর কমিটির সদস্য এটিএম আব্দুল্লাহ রনিসহ বসিরহাট তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলার নেতারা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন।
তারা বলেন, বিজেপি সরকার ইডিসিবিআই দিয়ে বিরোধীদের দমানোর চেষ্টা করছে। পুরীর ধর্মগুরু শংকরাচার্য সহ চারজন ধর্মগুরু রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠায় জায়গা পায়নি। সেই নিয়ে একরাশ খুব উগরে দিলেন। ২০১৪ সালে যে রামের কথা বলে দেশ দখল করেছে বিজেপি, যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বছরে ২ কোটি বেকারের কর্মসংস্থান, প্রত্যেকের ব্যাংক একাউন্টে ১৫ লক্ষ করে টাকা সেসব প্রতিশ্রুতি পালন করনি।, ঠিক ২০২৪ এর লোকসভা ভোটের আগে অযোধ্যায় রাম মন্দিরের রামলালা প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে ভোট বৈতরণি পার হতে চাইছে। আর বিরোধীদের ইডিসিবিআই লাগিয়ে দিয়ে দমন করার চেষ্টা করছ।
এতে লাভ হবে না।সুজিত বসু বলেন, ইডি সিবিআই দিয়ে তৃণমূল নেত্রীকে দমানো যাবেনা। আপনারা বলুনতো কেন্দ্রীয় বাহিনী কেন রুট ম্যাচ করছে। বাড়ির সামনেদিয়ে চলে যাচ্ছে। যেন একটা বড় ক্রিমিনালকে ধরতে এসেছে।দেশে এত বড় বড় ক্রিমিনাল। তারা দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পালিয়েছে। তাদেরকে ধরে আনতে পারছে না। তাই তৃণমূল নেতাদের সামাজিকভাবে সম্মানহানি করছে কেন্দ্র সরকার।