সামিম আহমেদ, রায়দিঘি : দীপাবলির মূল আকর্ষণ মাটির প্রদীপের। চায়নার ইলেকট্রিক লাইট বাজারে আসার ফলে সমস্যায় কুমোররা। মাটির প্রদীপ বিক্রির কোন অর্ডার নেই। খুচরো মাটির প্রদীপ যা বিক্রি হচ্ছে তাতে খরচা উঠছে না, এমনটাই দাবি কুমোরদের।
রায়দিঘি থানার উত্তর বয়ার গদির পালপাড়ায় অধিকাংশ ব্যক্তিরা কালী পূজার আগে থেকে মাটির জিনিসপত্র যেমন মাটির কলসি, হাড়ি, প্রদীপ, প্রদীপ দানি, দেবী ঘট, মাটির টব, সরা, মালসা, ডিগি তবলার কাঠামো সহ অন্যান্য সামগ্রী তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন। এর উপরেই চলে তাদের সংসার। এখানে সব থেকে ভালো মাটির তৈরি জিনিসপত্রের কারুকার্য করে থাকেন এলাকার বাসিন্দা বছর ৫২-র ধনঞ্জয় পাল। তিনি বাড়ির সকলকে নিয়ে এই কাজ করেন। প্রায় ২৫ বছর ধরে তিনি এই কাজ করে আসছেন। কিন্তু এবার মাটির জিনিসপত্র ঠিকমতো বিক্রি হচ্ছে না। বিক্রি হচ্ছে না মাটির প্রদীপও। ফলে সমস্যায় পড়েছেন উত্তর বয়ার গদির পাড়ার বাসিন্দা ধনঞ্জয় পাল। আর্থিক অনটনের জন্য তিনি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছেন। কোন প্রতিষ্ঠান বা সরকারি সাহায্য করলে তিনি এই শিল্পকলাকে পুনর্জীবিত করতে পারবেন বলে মত।
তিনি জানান, কম বয়সে বাবা-মাকে হারাই। ইচ্ছা থাকলেও আর্থিক অনটনের কারণে মাধ্যমিকের পর পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হই। সংসারের হাল ধরতে সেই থেকেই এই মাটির কাজ করে আসছি। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের একটি ক্যাম্পাস থেকে তিন বছরের কোর্স করেছি। তিনি সার্টিফিকেটধারী একজন মাটির শিল্পী। তিনি তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছেন “মঙ্গলা টেরাকোটা আর্ট সেন্টার”।
তারই তৈরি মাটির শিল্পকলা বেশ জনপ্রিয়। বহু দূর দূরান্ত থেকে মানুষজন পাইকারি হিসাবে মাটির শিল্পকলার জিনিসপত্র নিয়ে যান। কিন্তু বর্তমানে লকডাউন আর চায়নার ইলেকট্রিক লাইট বাজারে আসার ফলে সমস্ত মাটির প্রদীপ বিক্রয় বন্ধ হয়ে গিয়েছে।সেইসঙ্গে আর্থিক অনটনের মুখে পড়েছি। কি করব ভেবে উঠতে পারছি না। কোন প্রতিষ্ঠান বা সরকারি সাহায্য পেতাম তাহলে এই শিল্পকলাকে পুনর্জীবিত করা যেত বলে তাঁর দাবি।