পুবের কলম প্রতিবেদকঃ নিম্নচাপের প্রভাবে টানা কয়েকদিনের অতিভারী বৃষ্টির জেরে এগরা মহকুমা এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে জল বেড়েছে কেলেঘাই, বাঘুই নদী ও খালগুলিতে। বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। পটাশপুর এলাকার কিছু অংশ ইতিমধ্যেই প্লাবিত হতে শুরু করেছে। নদীর জল গিয়ে লোকালয়ে ঢুকছে। প্লাবিত হয়েছে ভগবানপুর ১, ২ এবং এগরা ১, ২ ব্লকের কিছু এলাকা। সতর্কবার্তা অনুযায়ী, এগরা ও পটাশপুরের ৪ টি ব্লকের আরও কিছু এলাকা প্লাবিত হতে পারে। একইসঙ্গে বন্যা পরিস্থিতিও দেখা দিতে পারে। সরকারি ভাবে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দফতরের আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার। পটাশপুর এলাকায় ২ হাজারেরও বেশি দুর্গতকে নিরাপদ স্থানে, ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ত্রাণ সামগ্রীও বিতরণ করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে। দুর্গতদের উদ্ধারের জন্য এসে পৌঁছেছে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ ও সিভিল ডিফেন্সের টিম।
অন্যদিকে বিপর্যস্ত ঘাটাল। শিলাবতী নদীর জল বেড়ে ঘাটাল শহর ছাড়াও ব্লকের বহু এলাকা প্লাবিত। ঝুমী নদীর জল বেড়ে বহু স্থানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। নদীর ওপর থাকা কাঠ ও বাঁশের সাঁকো ডুবে যাওয়ায় নৌকোয় করে শুরু হয়েছে যাতায়াত।
এক মাস আগের বন্যায় মনসুকা গ্রামের মানুষভতাই যাতায়াতের জন্য জল কমতেই বাঁশ ও কাঠের সাঁকো পুনরায় তৈরি করেছিল। আবার বৃষ্টির ফলে ঝুমী নদীর জল বাড়ায় সমস্ত সাঁকো জলের তোড়ে ভেঙে নিয়ে চলে গেছে দুদিনেই । ফলে নদীতে রাতদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকোতে পারাপার চলছে।
সেতুগুলি ভেসে যাওয়ায় এলাকাবাসীর একমাত্র উপায় নৌকা। এর ফলে মনসুকা ১ -২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ও হুগলী, মেদিনীপুরের দুই জেলার দূরদুরান্ত থেকে আসা মানুষদের ব্যাপক ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অন্যদিকে, চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের মনোহরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ৩০ টি গ্রামের কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি-সেচ দফতরের গাফিলতির ফলেই চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের মনোহরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৩০ টি গ্রামের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত।
জল কমতেই ব্লক প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সেই বাঁধ ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে মেরামত করা শুরু হলেও, মাঝপথে সেই কাজের দায়িত্ব নেয় সেচ দফতঢ়ের আধিকারিকরা। কাজ ধীর গতিতে চলাকালীন হঠাৎ করেই আবার বৃষ্টির ফলে পুনরায় শিলাবতী নদীর জল বেড়ে থমকে গেল খামারেড়িয়া এলাকায় বাঁধ মেরামতের কাজ। আর সেই ভাঙা বাঁধ দিয়ে জল ঢুকে মনোহরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খাঁপুর, গাঁচা, পাইকপাড়া, নিশ্চিন্তপুর, গ্রামের চাষের ব্যাপক ক্ষতি। এলাকাবাসীরা অভিযোগ, সেচ দফতরের গাফিলতিতে এই অবস্থা। এলাকাবাসীদের এই ধরনের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব থেকে শুরু করে, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, তারাও সেচ দফতঢ়ের গাফিলতি ফলে পুনরায় কৃষি কাজের ক্ষতি বলে দাবি করেছেন।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার থেকেই ঘাটাল পুরসভা এলাকাও শিলাবতী নদীর জলে প্লাবিত। ঘাটাল পৌরসভা এলাকার ১৭টি ওয়ার্ডের ১২ টি ওয়ার্ডই জলমগ্ন।